নয়াদিল্লি: মুখে শান্তির কথা বললেও, আফগানিস্তানে তালিবানের বর্বরোচিত আচরণের একের পর এক ঘটনা দেখা যাচ্ছে। বিরোধীদের ক্ষমা করে দেওয়া, সবাইকে নিয়ে চলার কথা বলার পরেও হেরাতের কাছে বাদঘিস প্রদেশের পুলিশ বিভাগের প্রধান জেনারেল হাজি মোল্লা আচাকজাইকে নির্মমভাবে হত্যা করল তালিবান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাত ও চোখ বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওই পুলিশ আধিকারিককে। তারপর তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।


আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তুর্কমেনিস্তান সীমান্তের কাছে বাদঘিস প্রদেশ এখন তালিবানের দখলে। গত সপ্তাহে ওই প্রদেশটিও দখল করে নেয় তালিবান। এরপর থেকে শুরু হয় অত্যাচার। জেনারেল হাজি মোল্লা আচাকজাইকে বন্দি করা হয়। এরপর তাঁকে হত্যা করা হয়।


আফগানিস্তানের এক মহিলা সাংবাদিক এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও রিট্যুইট করেছেন। তিনি তালিবানের তীব্র নিন্দা করেছেন।


জেনারেল হাজি মোল্লা আচাকজাই তালিবানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়েছেন। আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হওয়ার পরেও তালিবান সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন খুন হওয়া এই পুলিশ আধিকারিক। সেই কারণেই তাঁর উপর তালিবানের রাগ ছিল বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের সাংবাদিকরা।


গত রবিবার কাবুল দখল করার পর তালিবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের বিরোধীদের উপর কোনওরকম অত্যাচার করা হবে না। সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলবে তালিবান। কিন্তু সেটা যে আসলে শুধুই কথার কথা, তালিবানের আচরণে সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক গোপন রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী এবং ন্যাটোবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের খোঁজ করছে তালিবান।


রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাদের উপর রাগ আছে, তাদের তালিকা তৈরি করেছে তালিবান। সেই তালিকা অনুযায়ী বিরোধীদের পাকড়াও করার চেষ্টা করছে তালিবান। আফগান সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগে যাঁরা কর্মরত, আগে তাঁদের অপহরণ বা হত্যা করার চেষ্টা করছে তালিবান।