তেহরান: শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, ঋতু পরিবর্তনেও, মন পাল্টায়নি তাঁর। দীর্ঘ ৫০ বছর স্নান না করেই বেঁচেছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে 'নোংরা মানুষে'র তকমাও। কিন্তু স্নান করেই কাল হল ইরানের আমু হাজির (Amou Haji)। তার পরই অসুস্থ হয়ে পড়লেন তিনি। শেষমেশ মারাও গেলেন (The World’s Dirtiest Man)।


৫০ বছর স্নান করেই চলছিল, গা ভেজানোর পরই দুনিয়া ছাড়তে হল আমুকে


মূলত অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয়েই স্নান এড়িয়ে চলতেন আমু। প্রায় অর্ধশতক জলে গা ভেজাননি তিনি। তার জন্য দেশ-বিদেশে তাঁকে নিয়ে খবরও হয়। তকমা জোটে পৃথিবীর সবচেয়ে 'নোংরা মানুষে'র। তা সত্ত্বেও দিব্যি ছিলেন তিনি (Iran News)। 


স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরানের দক্ষিণ প্রান্তে দেজগা গ্রামে থাকতেন আমু। সম্প্রতি গ্রামের লোকজম মিলে তাঁকে ধরে নিয়ে যান শৌচালয়ে। সেখানে কার্যতই ধরেবেঁধে স্নান করানো হয় তাঁকে। এর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন আমু। ক্রমশ তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। শেষমেশ রবিবার মারা যান তিনি। 


আরও পড়ুন: Rishi Sunak New UK PM: ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ক্ষতে প্রলেপ! ঋষি সুনকের হাতে ব্রিটেনের শাসনভার, পৌরহিত্যে রাজা চার্লস


স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয়েতেই স্নানের অভ্যাস ত্যাগ করেছিলেন আমু। তার পর দীর্ঘ ৫০ বছর স্নান করেননি। কয়েক মাস  আগে কার্যত ধরেবেঁধে স্নান করানো হয় তাঁকে। তার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। লাগাতার পরিস্থিতির অবনতি হয়। আমুকে নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রও তৈরি হয় ২০১৩ সালে। সেই তথ্যচিত্রের নাম 'দ্য স্ট্রেঞ্জ লাইফ অফ আমু হাজি'।


আমুর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আগ্রহ রয়েছে জনমানসে। শোনা যায়, অল্পবয়সে এক এক মেয়ের প্রেমে পড়েন আমু। কিন্তু সেই মেয়ে তাঁকে প্রত্যাখ্য়ান করেন। তার পর থেকেই নিভৃতে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন আমু। বেঁচে থাকার জন্য শুধু যতটা প্রয়োজন, ততটাই খাবার খেতেন আমু। তাঁর প্রিয় খাবার ছিল মৃত এবং পচন ধরা শজারুর মাংস।  গ্রামবাসীরা তাজা মাংস নিয়ে এলেও ফিরিয়ে দিতেন আমু। তেলের টিনে জল খেতেন।


আমুকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল তথ্যচিত্রও


দূর থেকে আমুকে দেখে, কখনও কখনও পাথর বলেও ভ্রম হত বলে দাবি স্থানীয়দের।  খাওয়া-শোওয়া ছাড়া তেমন কাজ চিল না আমুর। পশু-পাখির মল পাইপে রেখে ধূমপান করতেন। গোবর একান্ত না পাওয়া গেলে সিগারেট বা বিড়িজাতীয় কিছু খেতেন।