কিভ: যুদ্ধ সমাপ্তির কোনও ইঙ্গিত নেই। বরং আক্রমণ বাড়িয়ে চলেছে রাশিয়া (Russia Ukraine War)। একঝাঁকে ইউক্রেনে ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ (Missile Attack) করার অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। তাতে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। বহু মানুষ আহতও হয়েছেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে এ বার আরও তেতে উঠল আন্তর্জাতিক মহল। রাষ্ট্রপুঞ্জে (United Nations) রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী দেশ’ (Terrorist State) বলে উল্লেখ করল ইউক্রেন।  


রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থতিতি নিয়ে সোমবার বিশেষ আলোচনা সভা চলছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায়। ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলকে রাশিয়া নিজেদের ভূখণ্ডে সংযুক্ত করেছে, তা নিয়ে চলছিল তর্ক-বিতর্ক। সেখানেই রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী দেশ’ বলে আক্রমণ করে ইউক্রেন। রাষ্ট্রপুঞ্জে ইউক্রেনের প্রতিনিধি সেরগেই কিসলিৎসা বলেন, ‘‘আরও একবার প্রমাণিত হল যে রাশিয়া একটি সন্ত্রাসী দেশ। অবিম্বের তাদের রোখা প্রয়োজন।’’


সেরগেইয়ের কথায়, ‘‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, যত ক্ষণ পর্যন্ত পাশে একটি অস্থির এবং উন্মাদ একনায়কতন্ত্র বিরাজ থাকে, সুস্থ মস্ত্রিষ্কে তত ক্ষণ পর্যন্ত স্থিতিশীলতা এবং শান্তির পক্ষে সওয়াল করা যায় না।’’ রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ইউক্রেনে ১৪ জন মারা গিয়েছেন এবং কমপক্ষে ৯৭ জন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি।


আরও পড়ুন: Army Dog Zoom: গুলিবিদ্ধ হয়েও জঙ্গিদের কামড়ে ধরে লড়াই, কাশ্মীরে সেনা অভিযানে আহত সৈনিক ‘জুম’


এর জবাবে রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেঞ্জিয়া জানান, পূর্ব ইউক্রেনের ভাই-বোনেদের রক্ষা করাই তাঁদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, ‘‘পূর্ব ইউক্রেনের ভাই-বোনেদের রক্ষা করার চেষ্টা করছি আমরা। আর আমাদের বিরুদ্ধেই অভিয়োগ তোলা হচ্ছে। পূর্ব ইউক্রেনের ভাই-বোনেদের বাঁচার অধিকার রয়েছে, নিজেদের ভাষায় কথা বলার অধিকার রয়েছে, সেই ভাষা ছেলেমেয়েকে শেখানোর অধিকার রয়েছে, নাৎজি শক্তির হাত থেকে মুক্তি এনে দেওয়া দেশনায়কদের সম্মান জানানোর পূর্ণ অধিকার রয়েছে।’’


রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেস। রাশিয়ার এই সিদ্ধান্ত একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না বলে জানান তিনি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ড জো বাইডেনও এই হামলার নিন্দা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘বেআইনি ভাবে যুদ্ধ চালিয়ে ফের নৃশংসতা প্রমাণ করল রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন সরকার।’’ তবে সমালোচনার মুখে পড়েও পিছু হটতে নারাজ রাশিয়া। দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জানিয়েছে, সবে প্রত্যাঘাত শুরু করেছে রাশিয়া। আক্রমণ আরও তীব্রতর আকার ধারণ করবে।


সমাপ্তির ইঙ্গিত নেই, তীব্র হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ


ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে রাশিয়া, তা আগেই সমর্থন করেনি আন্তর্জাতিক মহল। সেই নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভোটাভুটিতে শামিল ১৯৩টি দেশ। এ ক্ষেত্রে ভেটো প্রদানের ক্ষমতা নেই কারও। কারণ এর আগে, সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রপু্ঞ্জের নিরাপত্তা পুরষদে ভেটো প্রদানের ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাশিয়া। বুধবার এই ভোটাভুটি হবে বলে জানা গিয়েছে।