নয়াদিল্লি: জেনিভায় রাষ্ট্রপু্ঞ্জের মানবাধিকার পর্ষদের ৪২-তম অধিবেশনে ভারত, পাকিস্তানের সম্মুখ সমরের পরদিনই কাশ্মীর ইস্যুতে দুই প্রতিবেশীর সংঘাত তীব্র হয়ে ওঠার সম্ভাবনা মাথায় রেখে উদ্বেগ জানালেন রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুয়েতেরেস। উভয় পক্ষকেই আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ সমাধানের ডাক দিয়েছেন তিনি। গুয়েতেরেসের প্রধান মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ওদের সবার প্রতি ওনার (গুয়েতেরেস) প্রত্যক্ষ, পরোক্ষবার্তা একটাই। তা হল, বর্তমান পরিস্থিতি ঘিরে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় উনি খুবই বিচলিত। দুপক্ষকেই আলোচনার রাস্তায় বিষয়টি মোকাবিলার আবেদন করছেন উনি। কাশ্মীর প্রশ্নে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার ভাবনা খারিজ করেছেন তিনি। দুজারিককে প্রশ্ন করা হয়, গুয়েতেরেসের চলতি মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সালিসির কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা। তিনি জবাব দেন, আপনারা জানেন, মধ্যস্থতার প্রশ্নে নীতিগত ভাবে আমাদের অবস্থান বরাবর একই রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান-উভয়েই উপস্থিত থাকবেন।
রাষ্ট্রপুঞ্জ কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৯৭২-এর সিমলা চুক্তির উল্লেখ করেছে, যাতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। পাকিস্তানের পেশ করা মধ্যস্থতার প্রস্তাবের পর গত মাসে বিবৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছিল, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংক্রান্ত ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া ১৯৭২ এর সিমলা চুক্তিতে বলাই হয়েছে যে, জম্মু ও কাশ্মীরের চূড়ান্ত মর্যাদা শান্তিপূর্ণ রাস্তায় ভারত ও পাকিস্তানকেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ভিত্তিতে স্থির করতে হবে।
মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করেও দুজারিক বলেন, একমাত্র মানবাধিকারকে পূর্ণ মর্যাদা দিয়েই কাশ্মীরের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব।
গত মাসেই ফ্রান্সের বিয়েরিত্জ শহরে জি-৭ সামিটের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছিলেন গুয়েতেরেস। পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
গত সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেল পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধির অনুরোধ মেনে কাশ্মীর নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।
পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে এপর্যন্ত দুবার রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে শিঁকে ছেঁড়েনি একবারও। গত আগস্টে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীর নিয়ে ঘরোয়া, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে। যদিও সেখান থেকে কোনও বিবৃতি প্রকাশ বা কোনও সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়নি। ভারত স্পষ্ট আন্তর্জাতিক মহলকে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্ত তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে জানিয়ে দিয়ে পাকিস্তানকেও বলেছে, বাস্তব মেনে নিতে হবে তাদের।