ইসলামাবাদ: আন্তর্জাতিক স্তরে প্রবল চাপের মুখে মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার মূল চক্রী এবং জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সঈদকে জঙ্গি ঘোষণা করল পাকিস্তান। প্রসঙ্গত, মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই লাহৌরে প্রায় এক দশকের বেশি জামাত-উদ-দাওয়া সদর দফতরের বাইরে যে ব্যারিকেড বসানো ছিল, সেটা পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভেঙে দেওয়া হয়। তারপরই হাফিজকে জঙ্গি ঘোষণা পাকিস্তানের।


মূলত, নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে এই ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল জেইউডি-র সদর দফতরের বাইরে। গতকালই এই রকম ২৬টি জায়গা থেকে জেইউডির ব্যারিকেড তোলা হয়। তারমধ্যে জামাতের সদর দফতরও ছিল, জানিয়েছেন, লাহৌরের ডিআইজি ডক্টর হায়দার আশরফ।

মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেন একটি অর্ডিন্যান্সে সই করেন, যার ফলে সেই সমস্ত ব্যক্তি এবং সংগঠন যেগুলো রাষ্ট্রপুঞ্জের সিকিউরিটি কাউন্সিল আগেই নিষিদ্ধ করেছিল, সেগুলো নিষিদ্ধের তালিকাভূক্ত হল। সেই নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে লস্কর-ই-তৈবা, জামাত-উদ-দাওয়া, হারকত-উল-মুজাহিদিন, ফালাহ-ই-ইন্সানিয়াত ফাউন্ডেশনের মতো একাধিক সংগঠন। প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেনের সই করা অর্ডিন্যান্সের ফলে ওপরে উল্লেখিত সংগঠনগুলো অ্যান্টি টেররিজম অ্যাক্ট (এটিএ), ১৯৯৭-র আওতায় চলে এল।

রাষ্ট্রপুঞ্জ, এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে ২৭টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে। প্রসঙ্গত, এটিএ অ্যাক্টের সেকশন ১১-বি এবং ১১-ইইতে যে সংশোধন করা হয়েছে, সেটা হাফিজ সঈদের জন্যে যথেষ্ট সমস্যা কারণ।

তবে হুসেন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করল প্যারিসে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে পাকিস্তানকে গ্রে লিস্ট করার কথা শোনা যাচ্ছিল। মূলত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের যৌথ চাপেই গ্রে লিস্ট করার সিদ্ধান্ত। এই তালিকাভূক্ত হওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সীমান্তে লেনদেনের খরচ মারাত্মক বেড়ে যাবে পাকিস্তানের। এর আগে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইসলামিক রিপাবলিককে এই তালিকার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। পরবর্তী তিন বছর, এই তালিকায় ছিল ইসলামিক রিপাবলিক।

সম্প্রতি এটিএ অ্যাক্টে যে সংশোধন আনা হয়েছে, তার জেরে এই আইন নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর ওপর লাগু হলেই, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।