নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তান তুলবে কাশ্মীর ইস্যু। বিশ্বের দরবারে প্রকাশ্য করে দেবে ভূস্বর্গে ভারতীয় সেনার ‘নির্মমতা’ ও ‘অত্যাচার’-এর কাহিনি। ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশের মানুষকে এই আশ্বাস দিয়ে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যান পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। উরিতে ভারতীয় জওয়ানদের ওপর পাক জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ বিলকুল ভুলে গিয়ে কাশ্মীর নিয়ে হইচই শুরু করেন তিনি। আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধানকে এই মর্মে চিঠিও পাঠান পাক প্রধানমন্ত্রী। আবেদন করেন, কাশ্মীরে আড়াই মাসের বেশি ধরে চলা ‘দমননীতি’ রুখতে হস্তক্ষেপ করুক তারা। কারণ, তাঁর দাবি, কাশ্মীর পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও শান্তির পক্ষে ‘বিপজ্জনক’। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরির সঙ্গে দেখা করেও তিনি তুলে ধরেন কাশ্মীর প্রসঙ্গ।


কিন্তু এত কিছুর পরেও, অন্যান্যবারের মত এবারও কাশ্মীর নিয়ে শরিফের চেঁচামেচি আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় আমল পেল না মোটেই। ওই দুই বৈঠকে কী হয়েছে, তার এখনও কোনও লিখিত বিবৃতি আসেনি। কিন্তু পাক সংবাদমাধ্যমই জানিয়ে দিয়েছে ভেতরের ঘটনা। রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, কেরির সঙ্গে বৈঠকে শরিফ বলেন, এখনও পর্যন্ত কাশ্মীরে ১০৭জনের মৃত্যু হয়েছে, কয়েকশো মানুষ আহত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ‘সন্ত্রাস’-এর জেরে মানবাধিকার লঙ্ঘন সেখানে রোজকার ঘটনা। জবাবে জন কেরি শুধু সন্ত্রাসবাদ ও কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। কাশ্মীর বা ভারত নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি তিনি।

একই ঘটনা ঘটেছে থেরেসা মে-র সঙ্গে বৈঠকেও। শরিফের শত চেষ্টার পরেও মে শুধু আর্থিক স্থিতাবস্থা আনতে ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাক প্রচেষ্টাকে অভিনন্দন জানান। ব্রিটেনবাসী পাকিস্তানিদের সদর্থক ভূমিকারও প্রশংসা করেন। কিন্তু ভারত বা কাশ্মীর নিয়ে কোনওভাবেই তাঁর মুখ খোলাতে পারেননি পাক প্রধানমন্ত্রী।

ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে শরিফের এত হইচইয়ের কারণ, দেশের মাটিতে সেনাধ্যক্ষ রাহিল শরিফের থেকে কোনওভাবেই পিছিয়ে পড়তে চান না তিনি। তাই কাশ্মীর নামে পাকিস্তানের পক্ষে কার্যত মৃত ইস্যুকে এতবার জিইয়ে তোলার চেষ্টা।