ঢাকা: একবার নয়। গুলশনে জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে বারবার ঢাকাকে সতর্ক করে দিল্লি। সতর্কবার্তা এসেছিল আমেরিকার কাছ থেকেও। কিন্তু সেই সাবধানবাণী অবহেলার মাশুল মর্মান্তিকভাবে চোকালেন ২০জন পণবন্দি। সোশ্যাল মিডিয়ায় জঙ্গিরা ডিপ্লোম্যাটিক জোনে হামলার ছক নিয়ে পোস্টও করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশি গোয়েন্দারা গুরুত্ব দেননি তাতে।


গুলশন কাফে হামলার জঙ্গিরা নাকি সংকেতবার্তার মাধ্যমে সিরিয়া বা ইরাকে তাদের বসেদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস ধরে নানা ফটোগ্রাফের আড়ালে চলছিল এই সাংকেতিক বার্তা বিনিময়। সে সব বার্তার পাঠোদ্ধার করে ভারতীয় গোয়েন্দারা ৭ মে ও ১৬ জুন সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রশাসনকে সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, গুলশনে ডিপ্লোম্যাটিক জোন টার্গেট করেছে জঙ্গিরা। সেই বার্তা বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী প্রধান মনিরুল ইসলামের কাছে পৌঁছে দেন ‘র’-এর ঢাকা প্রতিনিধি। এমনকী সর্বোচ্চস্তরে সতর্কবার্তা পাঠান ‘র’ প্রধান রাজিন্দর খান্না নিজে। মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থাগুলিও বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দরকারমত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়।

এছাড়া আইএসের মুখপত্র, দাবিল নামে এক অনলাইন পত্রিকাতেও সম্প্রতি লেখা হয়, কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থানের কারণে খিলাফত প্রতিষ্ঠা ও আন্তর্জাতিক জিহাদের জন্য বাংলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। বাংলায় জিহাদ পাকাপোক্তভাবে ঘাঁটি গাড়তে পারলে ভারতে হামলা চালানো সহজ হবে। কিন্তু পরপর সতর্কবার্তা এলেও বাংলাদেশে আইএসের ছায়া পড়েনি প্রমাণে ব্যস্ত শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি তাতে।

বাংলাদেশি গোয়েন্দারা ভেতরে ভেতরে স্বীকার করছেন, বাংলাদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে কোথাও না কোথাও আন্তর্জাতিক যোগ আছে। কিন্তু গুলশন হামলার পিছনে গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল মানতে তাঁরা মোটেই রাজি নন। বরং তাঁদের দাবি, অল্প সময়ের মধ্যেই জঙ্গিদের পরিচয় বার করতে পেরেছেন তাঁরা। কিন্তু ভারত- আমেরিকা দু’দেশের নিরাপত্তা সংস্থাই বলছে, দেশজুড়ে পেটি ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ও সন্দেহভাজনদের লক্ষ্যহীনভাবে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ প্রশাসন অযথা সময় নষ্ট করছে।