নয়াদিল্লি: রাশিয়ার সম্ভাব্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দ্বিতীয় পর্যায় খুব শীঘ্রই শুরু হচ্ছে। এরইমধ্যে রুশ সরকার জানিয়েছে যে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ওই ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষের জন্য নিয়ে আসা হবে। স্পুটনিক নিউজ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখায়েল মুরাশকো বলেছেন যে, ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই তা বাজারে নিয়ে আসা হবে।
সংক্রমণের সংখ্যার নিরিখে বর্তমানে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে রাশিয়া। আক্রান্তের সংখ্যা ৭.৭০ লক্ষের বেশি। রাশিয়া জানিয়েছে, ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে এবং যে গোষ্ঠীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ভালো সাড়া পাওয়া গিয়েছে।

এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে গামালেই ন্যাশনাল সেন্টার ফর এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল হয়েছিল ১৮ জুন। সাধারণত, তিনটি পর্যায়ে সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চলে। প্রত্যেক পর্যায়ে প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত লোকজনদের সংখ্যা বাড়ানো হয়। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যবান কয়েকজনের গোষ্ঠীকে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। গত সপ্তাহে ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায় সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার ঘোষণা করেছিল। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রথম মাসব্যাপী ট্রায়াল গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। ৩৮ জন লোকের ওপর পরীক্ষা করা হয়। ট্রায়ালের পর গবেষকরা বলেছেন যে, ভ্যাকসিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপদ এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সফল হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রক বলেছে, গামালেই ন্যাশনাল সেন্টার ফর এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজির প্রাপ্ত তথ্যে প্রমাণ হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের ইঞ্জেকশনের পর প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রুপে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সফল হয়েছে।
ওই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন এখন দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করেছে এবং এই পর্ব আগামী ৩ অগাস্ট শেষ হওয়ার কথা। তৃতীয় পর্বে ১৮ বছরের বেশি বয়সের একটি বেশি সংখ্যক গোষ্ঠীর ওপর পরীক্ষা করে দেখা হবে। রয়টার্সের রিপোর্ট অনুসারে, এই পর্ব অগাস্টে দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর শুরু হতে পারে।

যেহেতু তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা এখনও শুরু হয়নি, তাই রাশিয়া যে ভ্যাকসিন তাড়াতাড়ি নিয়ে আসতে পারে, এমন উপসংহারে পৌঁছনো খুবই কঠিন। রুশ সংবাদসংস্থা তাস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আইডিআইএফ)-এর প্রধান কিরমিল ডিমিত্রিয়েভ বলেছেন, ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্ব ( তৃতীয় পর্ব)-এর ট্রায়াল অন্যান্য দেশের তুলনায় তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হবে। দেশে ভ্যাকসিন তৈরির বর্তমান পরিকাঠামোকেই এর কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট মহলে অনেকেরই আশঙ্কা, অন্য দেশের তুলনায় তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন তৈরি করতে রাশিয়া তাড়াহুড়ো করতে পারে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিমিট্রিয়েভ এ ধরনের আশঙ্কা খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রতিষ্ঠিত ভ্যাকসিন প্ল্যাটফর্মেই এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হচ্ছে।