জেনিভা: বিশ্বের প্রথম শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়া টিকায় (Malaria Vaccine) ছাড়পত্র দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা "হু" (WHO)। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে যে ভ্যাকসিনে অনুমোদন মিলেছে, তার নাম "আরটিএস, এস/এএস জিরো ওয়ান" (RTS,S/AS01)। প্রচলিত নাম "মস্কুইরিক্স" (Mosquirix)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মূলত আফ্রিকা মহাদেশে শিশুদের মধ্যে অতিমারীর চেহারা নিয়েছে ম্যালেরিয়া। হু-র সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, আফ্রিকায় প্রতিবছর পাঁচ বছরের নীচে আড়াই লক্ষেরও বেশি শিশুর ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সাব-সাহারান আফ্রিকায় শৈশবকালীন অসুস্থতা এবং মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হল ম্যালেরিয়া। এই অঞ্চলে প্লাসমোডিয়াম ফলসিপারম (প্রচলিত ম্যলিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া)-র হার অনেকটাই বেশি।
বুধবার এক সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ হওয়া এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে হু-এর মহাসচিব তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। শিশুদের জন্য বহু প্রতীক্ষিত এই ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন আদতে বিজ্ঞান, শিশু স্বাস্থ্য এবং ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি যুগান্তকারী প্রমাণিত হবে।
তিনি বলেন, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে বিদ্যমান মাধ্যমগুলির সঙ্গে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করলে প্রতি বছর হাজার হাজার তরুণের জীবন বাঁচাতে পারে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, পাঁচমাস বয়স থেকে ম্যালেরিয়া টিকার প্রয়োগ শুরু করা যাবে। নিতে হবে চারটি ডোজ।
২০১৯ থেকে ঘানা, কেনিয়া এবং মালাউইয়ের মতো দেশে ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছিল। বছরদুয়েক পর মিলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন।
হু মহাসচিব বলেন, ভ্যাকসিনটি উল্লেখযোগ্যভাবে ম্যালেরিয়া থেকে মৃত্যুর আশঙ্কা হ্রাস করে। একইসঙ্গে, তিনি যোগ করেন, এটি একমাত্র হাতিয়ার নয়। ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে টিকার পাশাপাশি মশারি সহ অন্যান্য ব্যবস্থার প্রয়োজন সমানতালে করতে হবে।
হু-এর আফ্রিকা মহাদেশের আঞ্চলিক অধিকর্তা মাৎসিদিশো মোয়েতি বলেন, বহু শতাব্দী ধরে ম্যালেরিয়া সাব-সাহারান আফ্রিকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। যার ফলে প্রচুর মানুষ কষ্ট পেয়েছেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি কার্যকরী ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন আশা করেছিলাম এবং এখন প্রথমবারের মতো আমাদের কাছে এই ধরনের অনুমোদিত টিকা ব্যাপকভাবে ব্যবহারের জন্য এসেছে।
তিনি বলেন, আজকের সুপারিশ আফ্রিকা মহাদেশের জন্য একটি আশার আলো প্রদান করবে। কারণ, আফ্রিকায় এই রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি এবং আমরা আশা করি আরও অনেক আফ্রিকান শিশু ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং সুস্থ জীবনযাপন করবে।
আরও পড়ুন: প্রথমবার পশ্চিম আফ্রিকায় খোঁজ মিলল মারণ মারবার্গ ভাইরাসের, জানাল হু
আরও পড়ুন: করোনা টিকাকরণের প্রক্রিয়াকে ত্বরাণ্বিত করায় ভারতের প্রশংসা WHO-র