নয়াদিল্লি: পাকিস্তানে ৭ বছরের মেয়ে জইনাব আলমের ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত ইমরান আলিকে দোষী ঘোষণা করে মৃত্যুদণ্ড দিল লাহোরের সন্ত্রাস দমন আদালত। পাশাপাশি তার একটি যাবজ্জীবন কারাবাস, সাত বছরের জেলের সাজাও হয়েছে। জরিমানা হয়েছে ৩২ লক্ষ টাকা। লাহোরের কোট লাখপতের সেন্ট্রাল জেলে এই রায় ঘোষণা হয় শনিবার।


পাক সংবাদপত্র ডন-এর খবর, ইমরানের ৩২ লক্ষ টাকা জরিমানা সমেত যাবজ্জীবন কারাবাস হয়েছে বিকৃত যৌন আচরণের জন্য। জৈনাবের দেহ আস্তাকুঁড়ে লুকিয়ে রাখায় সাত বছরের জেল, ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা হয়েছে তার।
ইমরানের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, খুন ও সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ ছিল। ইমরান অবশ্য আজকের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন পেশ করার জন্য ১৫ দিন সময় পাবে।
ডন এর খবর, সরকার পক্ষের আইনজীবী মিডিয়াকে জানান, ইমরানকে আত্মপক্ষ সমর্থনের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়। তবে সে অপরাধ কবুল করে। যদিও তাকে বলা হয়েছিল, যে তথ্যই দেবে সে, সেটা তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।
বৃহস্পতিবার সওয়াল শেষ হওয়ার পর রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। সন্ত্রাস দমন আদালতের বিচারক সাজ্জাদ আহমেদ লাহোর হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে দৈনিক ভিত্তিতে শুনানি করেন।
সরকার পক্ষ ইমরানের বিরুদ্ধে ৫৬ জন সাক্ষী পেশ করে, দাবি করে, ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট সহ নানা তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সে। সরকারপক্ষ তাদের দাবির স্বপক্ষে ভিডিওর ফরেনসিক রিপোর্ট সহ আরও নথি পেশ করে।




ইমরান দোষ কবুল করার পর তার আইনজীবী মেহের শাকিল মুলতানি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রত্যাহার করে নেন, সরকারপক্ষই তখন তাকে একজন আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দেয়। মুলতানি সাংবাদিকদের বলেন, এমন এক অপরাধীর হয়ে লড়তে হবে, কখনও ভাবতে পারেননি। ইমরান তাঁকে নিজের নির্দোষ থাকার ব্যাপারে বিভ্রান্ত করেছেন বলেও জানান তিনি।
শুরুতে অভিযুক্ত ইমরান অভিযোগ অস্বীকার করে চার্জ গঠনের সময় বিচারকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু খুব বেশি দেরি হয়নি, অপরাধ স্বীকার করে সে। ৯টি বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করেছে বলে জানায়।
১২ ফেব্রুয়ারি তাকে অভিযুক্ত করে আদালত, ১৪ ফেব্রুয়ারি তার পূর্ণ বিবৃতি নথিবদ্ধ হয়। পাকিস্তানের ইতিহাসে এত কম সময়ে বিচার শেষ করে সাজা ঘোষণার নজির নেই। মাত্র ৪ দিন লাগল গোটা প্রক্রিয়ায়।
৪ জানুয়ারি লাহোরের কাসুরে আত্মীয়ের বাড়ির কাছ থেকে জইনাবকে অপহরণ করা হয়েছিল। ৫ দিন বাদে তার দেহ পাওয়া যায় আবর্জনার স্তূপ থেকে। ময়নাতদন্তে তাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশি তদন্তে প্রকাশ, ইমরান তাকে একটি নির্মীয়মান বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর খুন করে দেহটি ময়লার স্তুপে ফেলে দেয়।
ডিএনএ রিপোর্টের ভিত্তিতে ইমরানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।