কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় তৎপর প্রশাসন। আজ, সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানালেন কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার নজরদারি চলবে। ১০ লক্ষ মানুষকে সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।


এদিন তিনি বলেন, অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। ‘আমফানের থেকেও বড় হতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ইতিমধ্যেই ৪ হাজার ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। ত্রাণশিবির গুলিতে করোনা বিধি মানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে মাস্ক পরে থাকতে হবে। যাঁদের মাস্ক নেই, তাঁদের মাস্ক দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, মৎস্যজীবী সমুদ্রে মাছ ধরতে যাবেন না। রাজ্যের ২০ জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের মারাত্মক প্রভাব পড়বে। ৫১টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল মোতায়েন করা হয়েছে। সব জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রী মজুত আছে। রাজ্যে ৪ হাজার সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিপর্যয় মোকাবিলায় ১ হাজারটি দল প্রস্তুত আছে। সেনাবাহিনীকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সরকারের সব এজেন্সিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, আমফানের অভিজ্ঞতা থেকে এবছর আগে থেকেই সিইএসই-র কাছে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে আবদেন করা হয়েছে।


উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও এই ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা। ওই বৈঠক প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৬০০ কোটি টাকা করে ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশকে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাকে ৪০০ কোটির সামান্য বেশি। তাঁর প্রশ্ন, কেন বঞ্চিত বাংলা? রাজ্যের টাকা থেকেই রাজ্যকে সাহায্য করা হয়েছিল। মাছের তেলে মাছ ভাজা। আমফানের সময়ও বলা হয়েছিল আর্থিক সাহায্য করা হবে। বুলবুল, আমফানের টাকা পেলাম না। আবার একটা ঝড় আসছে।


উল্লেখ্য, গতি বাড়িয়ে আগেই আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ ইতিমধ্যেই পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে। ধেয়ে আসছে বাংলা-ওড়িশা উপকূলের দিকে। বুধবার দুপুরের পরই আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ক্রমশ উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়। আগামীকাল অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। বুধবার সকাল থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। দুপুরের পর আছড়ে পড়তে পারে পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মাঝে স্থলভূমিতে। দিঘা থেকে বালেশ্বরের মধ্যে স্থলভাগে ঢোকার সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। স্থলভাগে ঢোকার সময় সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার হতে পারে।