সন্দীপ সরকার, কলকাতা: জটিল স্নায়ুর সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ইম্ফলের তরুণী। মুকুন্দপুর AMRI-তে জটিল অস্ত্রোপচারে মিলল সাফল্য। অক্সিপিটাল নার্ভ স্টিমুলেশন পদ্ধতিতে তরুণীর মস্তিষ্কে তরঙ্গ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হল। এমন অস্ত্রোপচার রাজ্যে প্রথম বলে দাবি চিকিৎসকদের।


থেকে থেকেই প্রবল মাথার যন্ত্রণায় ভুগতেন ওই তরুণী। কখনও একদিন, কখনও আবার টানা দু’দিন চলত যন্ত্রণা। প্রবল হতাশা, কষ্টে শেষ হতে বসেছিল ১৮ বছরের তরতাজা জীবন। আশার আলো দেখাতে পারছিলেন না কোনও চিকিৎসকই। অবশেষে জটিল অস্ত্রোপচারে তাঁর মুখেই হাসি ফোটালেন মুকুন্দপুর আমরির চিকিৎসকেরা।


হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেমি নামে ইম্ফলের ওই তরুণী প্রবল মাথার যন্ত্রণা নিয়ে  ৯ মাস আগে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন। পরীক্ষায় জানা যায়, অক্সিপিটাল নার্ভে রয়েছে জটিল সমস্যা। প্রয়োজন ছিল জটিল অস্ত্রোপচারের। যে অস্ত্রোপচার এই রাজ্যে বা দেশে আগে হয়নি।  


মার্কিন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক সহ ৫ জনের চিকিৎসকের দল সোমবার এই অস্ত্রোপচার করেন। বুধবার ছুটি হয় রেমির। কী বলছেন বছর ১৮-এর ওই তরুণী? 'প্রচণ্ড মাথার যন্ত্রণায় ভুগতাম। দিনভর যন্ত্রণা চলত। তবে এখন অস্ত্রোপচারের পর ভালে আছি।'


আরও পড়ুন: Malda News: বিয়ের বেনারসি, লেহেঙ্গা সহ গ্রেফতার তিন চোর, পুলিশের ভূমিকায় খুশি বৃদ্ধ দম্পতি


হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্সিপিটাল নার্ভ স্টিমুলেশন পদ্ধতিতে তরুণীর মাথার অক্সিপিটাল নার্ভে তার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কলার বোনের কাছে বসানো হয় একটি যন্ত্র। যেখান থেকে প্রয়োজন মতো তরঙ্গ পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট স্নায়ুতে। 


এএমআরআই মুকুন্দপুরের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ শিশির দাস বলেন, 'আমরা প্রথমে ওষুধ দিয়ে রোগীকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।' এরপরই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। 'আগে একবার ট্রায়াল করে নেওয়া হয়। তারপর মাথার কোন জায়গায় পৌঁছনো হবে সেটা ঠিক করি আমরা। গলার কাছে পকেট তৈরি করা হয়। টানেল বানানো হয়। তার পৌঁছে ব্যাটারির সঙ্গে জোড় করা হয়।'


হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও এখনই ইম্ফলে ফিরছেন না তরুণী। ৭ দিন পর কাটা হবে স্টিচ। আপাতত দীর্ঘ রোগযন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথে ইম্ফলের রোগিণী।