Work Stress: কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে মাত্র ২৬ বছর বয়সেই মৃত্যু পুনের একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত মহিলা কর্মীর। প্রথম চাকরি ছিল তাঁর এটা। আর সেই চাকরিতে জয়েন করার মাত্র ৪ মাসের মধ্যেই মৃত্যু হল তাঁর। সেই মহিলা কর্মীর (Employee Death) নাম আনা সেবাস্টিয়ান পেরাইল। পুনের একটি বহুজাতিক সংস্থা আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ে কাজ করতেন তিনি। মাত্র ৪ মাস আগেই যোগ দিয়েছিলেন এবং এটাই ছিল তাঁর প্রথম চাকরি। আর সেখানেই অমানুষিক কাজের চাপ (Anna Sebastian Peryil Death) সামলাতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি। মেয়ের মৃত্যুতে সংস্থার মালিক ও ঊর্ধ্বতন অধিকর্তাকে উদ্দেশ্য করে কড়া ভাষায় চিঠি লিখে দুষলেন তাঁর মা অনিতা অগাস্টিন।
চিঠিতে মৃতার মা লিখেছেন যে আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং সংস্থায় জীবনে প্রথম চাকরি পেয়েছিল তাঁর মেয়ে। একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সেবাস্টিয়ান। এই চাকরি পেয়ে প্রথমে বেশ উৎফুল্ল ছিলেন তিনি। কিন্তু অনেক রাত জেগে তাঁকে কাজ করতে হত, এমনকী ছুটির দিনেও রেহাই মিলত না। নতুন কাজে ঢুকেই প্রবল কাজের চাপ পড়েছিল তাঁর মেয়ের উপর। আর এই চিঠিতেই অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে মৃতার মা জানান যে, তাঁর মেয়ের শেষকৃত্যে সেই অফিসের থেকে একজনও আসেননি।
আনা সেবাস্টিয়ান স্কুলে এবং কলেজে উভয়ক্ষেত্রেই শীর্ষস্থান অধিকার করেছিলেন। তারপর সিএ পরীক্ষায় ডিস্টিংশন পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে এই সংস্থায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন আনা। নতুন কাজের জায়গা, নতুন কাজের পরিবেশ, আর একবারে অসহনীয় কাজের চাপ সব মিলিয়ে তাঁর শরীর ও মনের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ এই সংস্থায় কাজে যোগ দেয় আনা আর ২০ জুলাই মারা যান তিনি।
সেই অফিসে আগে থেকেই বহু কর্মী অত্যধিক কাজের চাপের কারণে ইস্তফা দিয়েছিলেন। আর সংস্থার পক্ষ থেকে এক্সিকিউটিভ হিসেবে আনার উপরেই অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া হয়েছিল। শিফট শেষের আগে আগেই তাঁকে কাজ দেওয়া হত যাতে তাঁকে ওভারটাইম করতে হয়। রাত জেগে কাজ শেষ করে পিজিতে ফিরে কাপড়-জামাটুকু না বদলে ঘুমিয়ে যেতেন আনা। ক্লান্তিতে, অবসাদে তাঁর শরীরে আর কোনও শক্তি থাকত না। এভাবে দিনের পর দিন চলছিল। একে নতুন শহর, নতুন জায়গা তার উপরে কাজের এত চাপ এত কিছু একবারে সামলাতে পারেনি আনা।
চিঠির বয়ান অনুযায়ী, মৃত্যুর ১৩ দিন আগে পুনে থেকে কোচিতে এসেছিলেন আনা কিন্তু বুকের ব্যথার কারণে তাঁকে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। টানা কয়েকদিন ভাল ঘুম না হওয়ায় তাঁর বুকে ব্যথাও শুরু হয়েছিল। টিম ম্যানেজারকে চিঠিতে দুষেছেন তাঁর মা। তাঁর বক্তব্য নিজে ক্রিকেট ম্যাচ দেখবেন বলে মিটিংয়ের সময়ও পালটে দিতেন তিনি আর বাড়তি কাজের বোঝা চাপাতেন আনার উপর। আর এই সংস্থার মানুষজন এতটাই মূল্যবোধহীন যে মেয়ের শেষকৃত্যেও কেউ একজনও আসেননি। অফিসের কাজের সংস্কৃতি, পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃতার মা।
আরও পড়ুন: Viral Video: বকেয়া ঋণ ফেরত আনতে গিয়ে 'ভগবানের' মুখোমুখি! মহিলার কীর্তিতে তাজ্জব ব্যাঙ্ক কর্তারা!