বিহার: স্বাধীনতার ইতিহাসে যারা বরণীয়, স্মরণীয়, সেই দুই বিপ্লবীর নামে এবার লক্ষাধিক টাকা জমা দেওয়ার নোটিস দিল বিহারের বিদ্যুৎ দফতর। যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মহান দুই স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া সংক্রান্ত নোটিস পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সেই নোটিসে বলা হয়েছে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা না দিলে কেটে দেওয়া হবে বিদ্যুতের লাইনও।  


নোটিসে দেওয়া হয়েছে ডেডলাইনও। সাত দিনের মধ্যে যদি এই দুই বিপ্লবী বকেয়া টাকা না দেন তাহলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান হয়। এই নোটিস নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।   


এ বিষয়ে সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (পূর্ব) জ্ঞান প্রকাশ জানান, কীভাবে শহীদদের নামে বিদ্যুতের বিল দাবি করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত ত্রুটি থাকতে পারে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে তথ্য নেওয়া হবে বলে জানান হয়েছে। তবে যেখানে দুই বিপ্লবীর স্মৃতিসৌধ রয়েছে, সেখানে তা রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থাটি গত কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না। হতে পারে সেটির জন্য। 


এদিকে, এখনও পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও NBPDCL আধিকারিকদের মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা যায়নি। প্রসঙ্গত, এই মুজফফরপুরেই ১৯০৮ সালে ব্রিটিশ বিচারক,ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যা করার চেষ্টায় বোমা ছুড়েছিলেন ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল চাকী। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না। ওই গাড়িতে ছিলেন আর এক ব্রিটিশ অফিসার প্রিঙ্গল কেনেডির স্ত্রী ও মেয়ে। তাঁরা এই ঘটনায় মারা যান। বেঁচে যান অত্যাচারী কিংসফোর্ড।


আরও পড়ুন, সমুদ্রতটে বড় বড় পায়ের ছাপ, ডাইনোসরের না অন্য কোনও দানবীয় প্রাণীর?


এরপর ক্ষুদিরামকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ। প্রফুল্ল চাকী পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগেই আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুদণ্ড হয় ক্ষুদিরামের। তিনি যেদিন শহিদ হন তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন। ১৯০৮-এর ১১ অগাস্ট মুজফ্ফপুর জেলে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ভগবত গীতা হাতে ফাঁসি কাঠের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় পরেছিলেন অকুতোভয় বীর বিপ্লবী ক্ষুদিরাম। 


এই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক কেদার প্রসাদ গুপ্ত বলেন, কীভাবে সরকার অন্ধ হয়ে গেছে। অন্ধ লোকদের দিয়ে সরকার চালানো হচ্ছে। বিহারে শহীদদের কাছেও বিদ্যুৎ বিল দাবি করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা অমর শহীদ ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী শহীদ হয়ে দেশের স্বাধীনতায় অবদান রেখেছেন, তাদের কাছে বিদ্যুৎ বিল দাবি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে?