নয়াদিল্লি: চার দশক পর আন্টার্কটিকায় এবার নয়া ডাকঘর খুলল ভারত। সেখানে চিঠি পাঠানোর নতুন পিন কোড হল MH-1718. ভারতীয় ডাক বিভাগের তরফে আন্টার্কটিকায় নয়া ডাকঘরটি খোলা হয়েছে। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে ওই পিন কোডটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াতেই দেশের অন্দরে ডাক বিভাগের নতুন শাখা খোলার প্রচলন রয়েছে।  (Antarctica Post Office)


১৯৮৪ সালে প্রথম বার আন্টার্কটিকায় ডাকঘর খোলে ভারত। আন্টার্কটিকায় গবেষণা চালাতে 'দক্ষিণ গঙ্গোত্রী' গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। সেখানেই ডাকঘরটি খোলা হয়। প্রথম বছরেই ওই ডাকঘরে ১০ হাজারের বেশি চিঠি পৌঁছয়। চিঠি লেখার শখ রয়েছে যাঁদের, বিজ্ঞানপ্রেমী, সমাজসেবী মানুষজন সেখানে চিঠি পাঠান। কিন্তু ১৯৮৮-'৮৯ সালে বরফের নীচে চাপা পড়ে যায় ওই গবেষণা কেন্দ্র। (Indian Post Office in Antarctica)


এর পর, ১৯৯০ সালের ২৬ জানুয়ারি আন্টার্কটিকায় আরও একটি ডাকঘর খোলে ভারত। সেখানে 'মৈত্রী গবেষণা কেন্দ্রে' ওই ডাকঘরটি খোলা হয়। সেই থেকে আজও সাদা খামে ওই ডাকঘরে চিঠি, পোস্টকার্ড পৌঁছে যাচ্ছে। খামের উপর আন্টার্কটিকার ডাকঘরের স্ট্যাম্প সংগ্রহে রাখার জন্যও চিঠি পাঠান বহু মানুষ। এবার একেবারে পিন কোড-সহ ডাকঘর খোলা হল সেখানে। 


আরও পড়ুন: Lok Sabha Elections 2024: ভারতের নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটাতে চিনের হাতিয়ার AI, সতর্ক করল মাইক্রোসফ্ট


এই নয়া ডাকঘরটি খোলা হয়েছে আন্টার্কটিকায় ভারতের 'ভারতী গবেষণা কেন্দ্র স্টেশনে'। 'মৈত্রী' এবং 'ভারতী', আন্টার্কটিকায় ভারতের এই দুই ডাকঘরের মধ্যে দূরত্ব ৩০০০ কিলোমিটার। তবে দু'টি ডাকঘরই গোয়া ডাক বিভাগের শাখা। ভারতীয় ডাক বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, আন্টার্কটিকার ডাকঘরে টিকিট পাঠানোর অর্থ ন্যাশনাল সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড ওশান রিসার্চ (NCPOR)-এ সেগুলি পৌঁছয়, যা কিনা গোয়ায় ভারতের মেরু অভিযান সংস্থার নোডাল সংস্থা। গবেষণার কাজে যাওয়ার সময় চিঠিপত্র আন্টার্কটিকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে স্ট্যাম্প দিয়ে আবার ফেরত আনা হয় সেগুলি। আন্টার্কটিকার পোস্ট অফিসের স্ট্যাম্প অনেকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলি সংগ্রহে রাখেন তাঁরা। 


আরও একটি কারণে আন্টার্কটিকায় ভারতের ডাকঘর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। NCPOR-এর প্রাক্তন বিজ্ঞানী এমন সুধাকর জানিয়েছেন, আটলান্টিক চুক্তির আওতায় আন্টার্কটিকায় বিভিন্ন দেশের পা পড়েছে। সেখানে কোনও দেশ জমি দখল করতে পারে না, সামরিক কার্যকলাপেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পরমাণু পরীক্ষা করার অনুমোদন নেই। শুধুমাত্র গবেষণা চালানো যেতে পারে আন্টার্কটিকায়। তাই সেখানে ডাকঘর গড়ে তোলা আসলে কৌশলের অঙ্গ, আন্টার্কটিকায় নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার মাধ্যম।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।