নয়া দিল্লি: মন্দির জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার ইঁদুর। কারণ, ভগবানের আসনে বসিয়ে পুজো করা হচ্ছে সাদা, কালো ইঁদুর। এই মন্দিরে গিয়ে আপনি যদি সাদা ইঁদুর দেখে ফেলেন তাহলে বুঝতে হবে আপনি সাংঘাতিক সৌভাগ্যবান। আপনার জীবনে ভালো কিছু ঘটবেই। তাদের নিয়মিত দুধ খেতে দেওয়া হয়। ভক্তরা সেই পাত্র থেকে আঙুলে করে দুধ নিয়ে প্রসাদ হিসেবে খেয়ে ফেলেন। ইঁদুর মারা তো হয়ই না। বরং তাদের দেখতে লোক ছুটে আসে দেশ-বিদেশ থেকে। 


এখানে ইঁদুরদের কিছু করা হয় না, কারণ এখানে ইঁদুর দেবতা জ্ঞানে পূজিত হয়। এমন একটি অদ্ভুত মন্দির রয়েছে রাজস্থানে। রাজস্থানের করনি মাতা মন্দির। রাজস্থানের বিকানের শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটি। মা দুর্গার এক রূপ হলেন করনি মাতা।


শোনা যায়, করনি মাতার ছেলে লক্ষণ একবার কপিল একদিন স্নান করতে গিয়ে ডুবে মারা যান। করনি তখন যমরাজের কাছে তার ছেলে প্রাণভিক্ষা চান কিন্তু যমরাজ তার ছেলেকে ফিরিয়ে না দিয়ে, উল্টে তার সমস্ত সন্তানকে ইঁদুর বানিয়ে দেয়। আবার এও শোনা যায়, বেশ কিছু বছর আগে অনেক সেনা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাণভয় আশ্রয় নিয়েছিল এই স্থানে। তখন করনি মাতা তাদেরকে ইঁদুরে পরিণত করে দেয়। এখানে ইঁদুরকে কেউ হত্যা করে না উল্টে খাবার খেতে দেন।                                                            


আরও পড়ুন, নাম তাজমহল হলেও কিন্তু আসলে 'মহল' নয়! জানেন এটি আদতে কী?


মনে করে, মৃত্যুর পর তারা সবাই কাব্বাস বা ইঁদুর হয়ে জন্ম নেয়। মন্দিরের ২০-৩০ হাজার ইঁদুরের মধ্যে কালো ইঁদুরই বেশি। অল্প কিছু সাদা ইঁদুর রয়েছে, মনে করা হয় তারা অত্যন্ত পবিত্র। দুর্ঘটনার ফলে মন্দিরের কোনো ইঁদুর যদি মারা যায়, তাহলে সোনা বা রুপো দিয়ে নতুন ইঁদুর তৈরি করে দিতে হবে।


প্রতিদিন ভোর চারটের সময় মন্দির খুলে যায়। দুধ ছাড়াও নাড়ু ও মিষ্টি দেওয়া হয় ইঁদুরদের। উচ্ছিষ্ট খাবার প্রসাদ হিসেবে পাওয়ার জন্য বিশাল লাইন পড়ে। দরজা বন্ধ হয় রাত ১০টায়। মন্দিরের স্থাপত্য এবং অলংকরণ খুব সুন্দর।