নাগপুর: এখানে ছাত্রের সংখ্যা ১(One Student in School), শিক্ষকও (One Teacher In School)এক জন । তিনিই সব বিষয়ের ক্লাস নেন। কয়েক দিন বা কয়েক মাস নয়, মহারাষ্ট্রের (maharashtra school) ওয়াশিম জেলার গণেশপুর গ্রামের এক জেলা পরিষদ প্রাথমিক স্কুলে গত দু'বছর ধরে টানা এভাবেই লেখাপড়া চলছে। কিন্তু এমন কেন?


অদ্ভূত সে স্কুলের কথা...
শিক্ষকের নাম কিশোর মানকর। সংবাদসংস্থা এএনআই-কে তিনি বললেন, 'স্কুলে এক জন পড়ুয়া রয়েছে। আর তাকে আমি একাই পড়াই।' কিন্তু যেখানে গোটা দেশে শিক্ষক-ছাত্র সংখ্যার অনুপাত রীতিমতো উদ্বেগজনক, সেখানে এক জন ছাত্রের জন্য এক জন শিক্ষক? এমন পরিস্থিতি কেন? ব্যাখ্যাটি অদ্ভূত। শিক্ষক জানালেন, গণেশপুর গ্রাম ও লাগোয়া এলাকায় মোটে ১৫০ জনের বসবাস। এবং যে স্কুলে প্রাথমিক স্কুলে তিনি পড়ান, সেখানে প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ওই এলাকায় এই শ্রেণিগুলিতে পঠনপাঠন নিতে পারে এমন বয়সী একজনই রয়েছে। তাই স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা ১। মানকরের কথায়, 'সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সমস্ত নিয়মনীতি মেনে পড়াই। এমনকি জাতীয় সঙ্গীতও গাওয়া হয়।' শুধু তা-ই নয়, পড়ুয়ার জন্য মিড ডে মিলের ব্যবস্থাও করা হয় সেখানে। শিক্ষকের দাবি, সরকারের তরফে মিড ডে মিলের যে সুবিধা দেওয়া হয় তারও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্যেই শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। গত ডিসেম্বরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একটি মামলায় এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।


শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত নিয়ে চিন্তা...
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় একটি মামলা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'রাজ্যকে ছাত্র (Student) ও শিক্ষকের (teacher) অনুপাত (ratio) জানাতে হবে। তারপরেই আদালত বদলির (transfer) নির্দেশ (order)) দেবে। তার আগে কোনও বদলি সংক্রান্ত মামলার নির্দেশ নয়।' সঙ্গে আরও বলেন, 'শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধার অধিকার থাকলে ছাত্রদেরও অধিকার আছে। আদালত পড়ুয়াদের জন্য চিন্তিত।' তাঁর মতে, শিক্ষকদের যেমন বেতন-সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে তেমনই ছাত্রদেরও উপযুক্ত শিক্ষার অধিকার রয়েছে। পুরুলিয়ার প্রাথমিক স্কুল থেকে বদলি নিতে মামলা করেন এক শিক্ষক। সেই প্রেক্ষিতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, 'ওই স্কুলে কতজন পড়ুয়া রয়েছে ?' আদালতে জানালেন মামলাকারীর আইনজীবী জানান, ৫৬ জন পড়ুয়া রয়েছে। এর পরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'এখন ভালো করে ছাত্রদের পড়াতে বলুন। এখন আমি কোনও বদলির নির্দেশ দেব না।' তোলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর কথাও। বলেন, 'বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বদলি মামলায় রাজ্যের স্কুলগুলির ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত জানতে চেয়েছিলেন, আমিও চাইছি।' প্রসঙ্গত সপ্তাহদুয়েক আগেই বাঁকুড়ার এক স্কুলের কথা সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসে যেখানে লকডাউনের সময় থেকে শিক্ষক নেই। 


আরও পড়ুন:ঘন কুয়াশায় পথ দুর্ঘটনা বাসন্তীতে, রাস্তার পাশে পুকুরে উল্টোল ট্যাক্সি