নয়া দিল্লি: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, 'তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল', কিন্তু আমরা কি পেরেছি? আমরা কি পেরেছি প্লাস্টিকমুক্ত সমাজ তৈরি করতে? এ প্রশ্ন ছিল, এ প্রশ্ন আছে আজও। কারণ প্লাস্টিকমুক্ত তো দূরঅস্ত যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলার অভ্যাসও কমানো যায়নি। ফলস্বরূপ, ক্রমশই বাড়ছে দূষণ।  


সমুদ্রতট থেকে চিড়িয়াখানা, বনজঙ্গল- সর্বত্রই প্লাস্টিক বোতলের যথেচ্ছ ব্যবহার দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে এর জেরে বিপদের সম্মুখীন হয় বসবাসকারী প্রাণীরা। কখনও মাছ কখনও বন্যপ্রাণ। অনেক সময়ই দেখা যায়, বন্য প্রাণীরা ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক চিবিয়ে খায় যা তাদের স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে। 


সম্প্রতি ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার দীপ কাঠিকারের তোলা একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি বাঘ প্লাস্টিক বোতল তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র রাখছে। বন্যপ্রাণ কতটা বিপদের সম্মুখীন তা এই ভিডিও বার্তায় প্রকট হয়েছে, এমনটাই মত নেটিজেনদের। 


ভিডিওটি মহারাষ্ট্রের তাডোবা জাতীয় উদ্যানের। ওই ভিডিও পোস্টে দীপ কাঠিকার জানান ভিডিও ফুটেজটি ২০২৩ এর ডিসেম্বরে তোলা। বাঘটি রামদেগি পাহাড়ের বাঘ ভানুসখিন্দির শাবক। । ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বাঘটি জল থেকে প্লাস্টিকটি সরিয়ে ফেলছে এবং তারপরে বোতলটিকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। ওই ভিডিও পোস্টেই দীপ কাঠিকার বলেন, 'আমরা আমাদের জঙ্গল পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করব।' 






যদিও এই ভিডিও দেখে নেটিজেনদের অনেকেই নানা মত পোষণ করেছেন। ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস অফিসার সুশান্ত নন্দাও তার এক্স অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন এবং মানুষকে বনের মধ্যে প্লাস্টিকের আবর্জনা না ফেলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।  তিনি লিখেছেন, 'বন্যরা কেন (অসভ্যদের) আবর্জনা পরিষ্কার করবে? দয়া করে প্লাস্টিক ও স্টাইরোফোম বনজঙ্গলে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করুন।' 


আরও পড়ুন, সেলফি তুলতে দিতে হয় টাকা! পর্যটকদের থেকে অর্থ উপার্জনেই ধনী এই গ্রাম


এক নেটিজেন লিখেছেন, 'ভিডিওটি আদতে উপভোগ্য হলেও এই বিষয়টিকে অনেক ভাবনার রসদ রয়েছে। অত্যন্ত লজ্জিত বোধ করছি কারণ মানুষের ফেলা যাওয়া নোংরা পরিষ্কার করতে হচ্ছে এমন জাতীয় প্রাণীটিকে।'  একজন লিখেছেন, ''এগুলি এমন একটি মর্মান্তিক ফুটেজ... আমরা আমাদের গ্রহের যে পরিমাণ ক্ষতি করছি তা দেখে খুব খারাপ লাগছে।''