নয়াদিল্লি: দিনভর এর ওর বাড়ির ছাদ টপকানোর বালাই নেই। রাতে মাথাগোঁজার জায়গা খোঁজার ঝক্কিও পোহাতে হবে না। আবার খাবারের জোগানও রয়েছে পর্যাপ্ত। তাই বিমানের মধ্যেই নিশ্চিন্তে আশ্রয় নিয়েছিল। উচ্ছেদ করতে এলে তীব্র প্রতিবাদ জানাল মার্জার। দু’দিন ধরে বিমান আটকে রাখল সে। সকলকে নাকের জলে, চোখের জলে ভাসিয়ে, শেষমেশ ‘ক্যাটওয়াক’ করে বেরিয়ে গেল। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। (Cat Hijacks Plane)
গালগল্প বলে মনে হলেও রোমের বিমানবন্দরে দু’দিন ধরে এভাবেই সকলকে নাকানিচোবানি খাওয়াল এক বিড়াল। Ryan Air-এর একটি বিমানের রোম থেকে জার্মানি উড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উড়ানের কিছু ক্ষণ আগে সাদা-কালো বিমানটি চোখে পড়ে সকলের। আর তার পর যা ঘটল, তার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলেন না, না যাত্রীরা, না বিমানকর্মীরা। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ বিড়াল বিমান ছিনতাই করেছে বলে কোনও কালেই শোনেননি কেউ। (Viral News)
লাল-নীল-হলুদ-সাদা তারের জটলার পিছনে, বিমানের একটি প্যানেলের মধ্যে ঘাপটি মেরে ছিল বিড়ালটি। আয়েশ তরে একটি ইঁদুরের মাথামুণ্ডু চিবিয়ে খাচ্ছিল। তাঁকে টেনে বের করতে গেলে বিপাকে পড়েন বিমানকর্মীরা। যত টেনে বের করতে এগোন তাঁরা, ততই প্যানেলের আরও ভিতরে ঢুকে যায় বিড়ালটি। ওই অবস্থায় বিমান ওড়ানোর ঝুঁকি নেননি কেউ। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ফলে উড়ান বাতিল করা হয়।
কিন্তু আসল লড়াই শুরু হয় তার পর। বিড়ালটির নাগাল পেতে পর পর প্যানেল খুলতে শুরু করেন বিমানকর্মীরা। কিন্তু বিমানটি তাঁদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে শুরু করে রীতিমতো। এই এখানে, তো পর মুহূর্তেই অন্যত্র সরে যায়। দু’দিন ধরে খেলা চলে। ধরতে গেলেই পালিয়ে যায়, আর ম্যাও ম্যাও হাঁক পেড়ে কার্যত ব্যঙ্গ করতে থাকে সকলকে।
এভাবে যে বিড়ালটির নাগাল পাওয়া যাবে না, তা সকলেই বুঝে যান। তাঁরা যখন হাল ছেড়ে দেওয়ার জোগাড়, আড়াল সরিয়ে নিজে থেকেই আবির্ভূত হয় বিড়ালটি। কাউকে কাছে ঘেঁষতে দেয়নি মোটেই। বরং হাবভাব ছিল রানওয়ে কাঁপানো মডেলের মতো। সিঁড়ি বেয়ে একেবারে ক্যাটওয়াক করে নিজেই নেমে আসে নীচে। কোনও দিকে না তাকিয়ে বেরিয়ে যায়। তাতেই শেষ পর্যন্ত হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সকলে।
বিমানকর্মীরা জানিয়েছেন, বিমানটি কার্যত হাইজ্যাক করে বসেছিল বিড়ালটি। কোথাও যদি কোনও তার কেটে দেয়, বা বিমানের ক্ষতি করে বসে, তাই উড়ানের ঝুঁকি নেননি কেউ। বিড়ালটিকে যেনতেন প্রকারে বের করে আনাই লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তাতে যে দু’দিন কেটে যাবে, বিমানবন্দরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবে বিমানটি, তা কেউই আঁচ করতে পারেননি।