কলকাতা: আজকালকার দিনে মোবাইল ফোন ছাড়া এক পাও চলা অসম্ভব। যোগাযোগ থেকে শুরু করে অফিসের কাজ, এমনকি টাকা-পয়সার লেনদেন সবই হয় মোবাইল ফোনে। একটা সময় যখন মোবাইল ফোন ছিল না, তখনকার কথা কল্পনা করলে চমকে উঠতে হয়। কীভাবে হত তখন এত কিছু ? আর যিনি মোবাইল (Mobile Phone) আবিষ্কার করলেন প্রথম, এই বিশ্বের ইতিহাসে তিনি তো অমর। কিন্তু জানেন কী, সেই মোবাইলে প্রথম কে কথা বলেছিলেন ? কীভাবে আবিষ্কার হল এই মোবাইল ফোন ?


আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগের কথা। ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল মোটোরলা কোম্পানির কর্মী মার্টিন কুপারই প্রথম এই মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেন। নিউ ইয়র্কের সিক্সথ অ্যাভিনিউ থেকেই তিনি প্রথম ফোনে কথা বলেছিলেন। ৫৩ ও ৫৪ নং স্ট্রিটের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে প্রথম ফোন (Mobile Phone) করেন মার্টিন কুপার। বিশ্বের প্রথম পোর্টেবল সেলফোন বানানোর প্রজেক্টে কাজ করছিলেন মার্টিন কুপার। প্রথম সেই ফোন তৈরি করার পর কাকে ফোন করেছিলেন কুপার ? মোটোরোলার তখনকার প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি বেল ল্যাবরেটরিজের কর্মী জোয়েল এঞ্জেলকে ফোন করে কুপার বলেছিলেন, তিনি একটা নিজস্ব, হাতে ধরা যায় এমন চলমান সেলফোন থেকে কথা বলছেন।


ফোনে মার্টিন কুপার বলেন, 'জোয়েল, আমি মার্টি, সেলফোন থেকে আমি ফোন করছি। একটা সত্যিকারের হাতে ধরা চলমান সেলফোন।' অন্যপারে তখন সব চুপচাপ। কোনও উত্তর নেই জোয়েলের। ২০১১ সালে বিবিসির একটি সাক্ষাৎকারে মার্টিন কুপার বলেছিলেন, তাঁর এই কথা শুনে জোয়েলের মুখে কোনও সাড়া ছিল না কিছুক্ষণ। তিনি ভেবেছিলেন জোয়েল হয়ত দাঁত কামড়াচ্ছে।


আজকের দিনের সরু পাতলা গোছের মোবাইলের (Mobile Phone) বদলে সেই সময় বিশ্বের প্রথম মোবাইল ফোনটা একটা জুতোর বাক্সের মতই বড় ছিল। একজন সেই ফোনে একটানা ২৫ মিনিট কথা বলতে পারতেন, আর ১০ ঘণ্টা সময় লাগত চার্জ দিতে সেই ফোন। তবে সেই ফোন বাজারে আসতে লেগে গেল আরও ১০ বছর। ১৯৮৩ সালেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোটোরোলা প্রথম তার DynaTAC 8000X মোবাইল ফোন বাজারে আনে। তখন তার দাম ছিল ৩৯৯৫ ডলার। ফোনটির ওজন ছিল এক কিলোর কাছাকাছি, মার্কিন হিসেবে আড়াই পাউন্ডের কাছাকাছি। মার্টিন কুপার জানান যে এই ফোন এতটাই ভারি ছিল যে একে টানা ২৫ মিনিটের বেশি হাতে ধরেও রাখা যেত না।


আজ থেকে ৫০ বছর আগে আবিষ্কার হওয়া মোবাইল ফোন (Mobile Phone) আজ কীভাবে বিশ্বকে পালটে ফেলছে ক্রমে ক্রমে। এই মোবাইলের পরিবর্তন নিয়ে মার্টিন কুপার এক সাক্ষাৎকারে জানান যে আগামীদিনে মোবাইল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার জগতকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তিনি বলেন, 'আমি আশাবাদী। মোবাইল ফোনের প্রচুর খারাপ দিক আছে। কিন্তু আমি আজও মনে করি যে মানবসভ্যতাকে এটি ভালপথেই চালিত করেছে এবং ভবিষ্যতেও তাই করবে।'    


আরও পড়ুন: Guinness World Record: নাকের মধ্যে গোঁজা ৬৮টি দেশলাই কাঠি! আশ্চর্য বিশ্বরেকর্ড যুবকের