কলকাতা: প্রতিবছর অম্বুবাচীতে ৩ দিনের জন্য বন্ধ থাকে কামাখ্যা মন্দির। ততদিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন ভক্তরা। তিন দিন বন্ধ থাকার পরে আজ ফের খুলেছে কামাখ্যা মন্দিরের দ্বার। আর এদিনই কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে মন্দির। পুজো দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে পৌঁছেছেন ভক্তরা। 


এই সময়েই আর্শীবাদ স্বরূপ রক্ত বস্ত্রখণ্ড বিলি করা হয় মন্দিরে। সেই বস্ত্র লাভের আশাতেই প্রতিবছর অম্বুবাচী শেষে ভক্তদের ঢল নামে কামাখ্যা মন্দিরে।


অন্যতম শক্তিপীঠ এই কামাখ্যা। কথিত রয়েছে, সতীর মৃত্যুর উপর ভয়ানক ক্রোধিত হয়ে সতীর দেহ নিয়ে প্রলয়নৃত্য শুরু করেছিলেন দেবাদিদেব মহাদেব। সেই সময় সৃষ্টি বাঁচানোর জন্য় এবং মহাদেবের ক্রোধ লাগামে আনার জন্য সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন ভগবান বিষ্ণু। সেই সময়েই সতীর দেহের টুকরো যেখানে যেখানে পড়েছিল সেখানেই পরে শক্তিপীঠ তৈরি হয়। তন্ত্রাচার এবং শক্তি উপাসনার অন্যতম পীঠ এবং তীর্থক্ষেত্রে কামাখ্য়া।


২৩ জুন শুরু হয়েছিল অম্বুবাচী। ২৬ জুন খুলল মন্দির। চারদিনের পরে এদিন 'নিভৃতি' হবে। এদিন নিভৃতির পরে যাবতীয় অনুষ্ঠান ও আচার পালন হবে। সেই আচার-রীতি দেখার জন্যই এদিন ভিড় জমান ভক্তরা।


২৩ জুন, রাত আড়াইটেয় শুরু হয়েছিল অম্বুবাচী মেলার প্রভৃত্তি আচার। এটিই তিন-দিন, তিন রাতের অনুষ্ঠানের শুরু। এই সময় থেকেই কামাখ্যা মন্দিরের মূল দরজা বন্ধ করা হয়। তারপর ২৬ জুন, খোলা হল কামাখ্যা মন্দিরের দরজা। এই উৎসব উপলক্ষে গোটা মন্দির সাজিয়ে তোলা হয়েছে।


 






প্রতিবছর বর্ষা ঋতুতে হয় অম্বুবাচী মেলা। আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তৃতীয় পদ শেষ হলে মাসের চতুর্থ পদে পড়লেই শুরু হয় অম্বুবাচী। তিনদিন চলে সেই পর্যায়। গুয়াহাটির অদূরে নীলাচল পাহাড়ের উপরে রয়েছে কামাখ্যা মন্দির। হিন্দু সংস্কৃতিতে অম্বুবাচীর সময়টা অত্যন্ত পবিত্র। বিশ্বাস রয়েছে এই সময়টা আধ্য়াত্মিক, ধার্মিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস রয়েছে, এই সময়ে ভক্তিভরে পুজো দিলে সন্তানপ্রাপ্তি, স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত-সহ মনে যাবতীয় আশা পূর্ণ হয়। 


বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সময় তন্ত্র-মন্ত্র সাধকরা আসেন অম্বুবাচী মেলায়। কথিত রয়েছে মন্দিরের ফটক নাকি এই সময় নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। মা হন রজস্বলা। এই সময় দেবীর মন্দির বন্ধ থাকে। আর সকলে মন্দির ঘিরে কীর্তন করেন। চতুর্থ দিনে দেবীর পুজো ও স্নানের পরই খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। এরপর বিতরণ করা হয় প্রসাদ। রক্তবস্ত্র আশীর্বাদ হিসেবে মেলে।


আরও পড়ুন: কতবার দুধ ফোটান? পদ্ধতি কি ঠিক? পুষ্টিগুণ নষ্ট হচ্ছে না তো?