কলকাতা: প্রত্যেক বছরই তাঁর বাসভবনে কালীপুজো হয়। এবারও ব্যতিক্রম হল না। একদিকে অতিথি আপ্যায়ন, অন্য দিকে পুজোর তদারকি---সব দিক সামলালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee Kali Puja 2023)। পুজোর আমেজে তুমুল ব্যস্ততা তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে।


কী ছবি?
কালীপুজো উপলক্ষ্যে হোমের আয়োজন করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে। সেখানে আহুতি দিতে দেখা গেল ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। চেয়ারে বসে সবটা তদারকি করলেন তৃণমূলনেত্রী। এদিন তাঁর বাড়ির পুজোতে হাজির ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ আরও অনেককে। আটপৌরে কায়দায় শাড়ি পরে সবটা তদারক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন রাজ্যজুড়েই শক্তির আরাধনা হয়। কলকাতা থেকে কামাখ্যা, বীরভূম থেকে বারাসাত। কালীপুজো উপলক্ষ্যে দিকে দিকে সাড়ম্বর আয়োজন করা হয়েছে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির গভীর রাতে যোগিনী পরিবৃতা হয়ে আবির্ভূতা হন মা কালী৷ জগতে কল্যাণ এবং শান্তি স্থাপনের জন্য ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন৷ তিনি অসুখ বিনাশিনী৷ মহা শক্তিধর শুম্ভ-নিশুম্ভের হাত থেকে ত্রিলোককে রক্ষা করতেই দেবীর সৃষ্টি৷ নরমুণ্ডই দেবীর অলঙ্কার৷ যুদ্ধে পরাজিত সেনাপতিদের মুণ্ডের মালা মা কালীর কণ্ঠের শোভা৷ বলা হয়, পঞ্চাশটি মুণ্ডের এই মালা আসলে জ্ঞানের প্রতীক৷ যে সেনাপতি তাঁর চুল ধরে অপমান করেছিল, তাঁর মুণ্ড দেবী হাতে ধরে থাকেন৷ মৃত সেনাপতিদের হাতের পাতা দেবী কোমরে ধারণ করেন৷ শাস্ত্রমতে এই করতলও জ্ঞানের প্রতীক৷ ভুল করে স্বামী মহাদেবের গায়ে পা তুলে ফেলায় লজ্জিতা রণে উন্মত্ত দেবী৷


আরাধনা কালীঘাটে...
আজ কালীঘাটে আবার মহালক্ষ্মী রূপে শ্যামা মায়ের আরাধনা হয়। কালীপুজোর দিন এখানে লক্ষ্মীপুজো হয়। একান্ন পীঠের অন্যতম কালীঘাট। কিংবদন্তি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল এখানে। অন্যতম প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত কালীঘাট। কালীপুজোর দিন সকাল থেকেই কালীঘাট মন্দিরে ভক্তদের ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে পুজো দিতে এসেছেন পুণ্যার্থীরা। আজ গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে মন্দির। পুজো উপলক্ষ্যে কড়া নিরাপত্তা। মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ। অন্য দিকে, কালীপুজো উপলক্ষ্যে সকাল থেকে ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে ভক্তের ঢল। মাতৃসাধক শঙ্কর ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন এই মন্দির। ১৭০৩ সালে এই মন্দিরে পুজো শুরু হয়। জনশ্রুতি, ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে আসতেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস। প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজো হয় ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে। দীপান্বিতা অমাবস্যাতেও ষোড়শপচারে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে দেবীমূর্তি জাগ্রত বলে মনে করেন ভক্তরা।


আরও পড়ুন:দেবী চৌধুরানির প্রিয় শোল ও বোয়াল মাছের ভোগ দেওয়া হয় জলপাইগুড়ির এই কালীপুজোয়