মহিষাসুরের অত্যাচারে তখন অতিষ্ঠ দেবতারা। কী করবেন ভেবে না পেয়ে মহাদেবের শরণাপন্ন দেবরাজ ইন্দ্রের নেতৃত্বে সব দেবতারা। প্রজাপতি ব্রহ্মাও তখন নিরুপায়। মহিষাসুরের কাছে বর রয়েছে, কোনও পুরুষ তার মৃত্যুর কারণ হবে না। আর ত্রিভুবনে (Durga Puja celebration) তাকে বধ করবে এমন নারী আছে নাকি ! দেবতারা তখন সকলে মহাদেবের দরবারে। মহাদেব তখন সকলকে পরামর্শ দিলেন নারায়ণের কাছে যাওয়ার। এরপর ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের মিলিত তেজে সৃষ্টি হল মহামায়ার। আর  তাঁকে মহিষাসুর সংহার করার জন্য একে একে নিজেদের সেরা শক্তিটুকু দেবীর হাতে তুলে দিলেন দেবতারা। মহিষাসুরমর্দিনীর দশহাতে যে দশ অস্ত্র রয়েছে তার পিছনে রয়েছে একেক দেবতার শক্তি। (Durga Puja 2023)  


স্বামী যুক্তানন্দের লেখা  'গল্পে শ্রী শ্রী চণ্ডী' বইতে রয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ। 



  • ত্রিশূলধারী মহাদেব নিজ ত্রিশূল থেকে আরেকটি  ত্রিশূল সৃষ্টি করে দেবীকে অর্পণ করেন। 

  • বিষ্ণু নিজ সুদর্শন চক্র থেকে আরেকটি  চক্র তৈরি করে তা দেবীকে দেন।

  • বরুণদেব দেবীকে দেন শঙ্খ। 

  • অগ্নিদেব শক্তি অস্ত্র প্রদান করলেন।

  • বায়ু দেব দেবীকে দেন ধনু এবং বাণপূর্ণ দু'টি তৃণ ।

  • দেবরাজ ইন্দ্ৰ নিজ বজ্র থেকে আরেকটি অনুরূপ বজ্র তৈরি করে দেবীকে দেন। 

  • সেই সঙ্গে দেন ঐরাবতের গলদেশস্থ ঘণ্টার অনুরূপ ঘণ্টা

  • যম নিজ কালদণ্ড থেকে একটি একই রকম দণ্ড সৃষ্টি করে দেবীকে দেন। 

  •  বরুণদেব নিজ পাশ থেকে একটি পাশ দেন দেবীকে। 

  • প্রজাপতি ব্রহ্মা হাতে তুলে দেন একটি রুদ্রাক্ষ মালা ও কমণ্ডলু

  • দুর্গা দেবীর সমস্ত লোমকূপে সূর্যদেব নিজের কিরণরাশি ঢেলে দেন। 

  •  কালাভিমানী দেবতারা তাঁর হাতে তুলে দেন একটি খড়গ ও উজ্জ্বল ঢাল।

  • পর্বতরাজ হিমালয় তাঁকে তাঁর বাহনরূপে একটি সিংহ প্রদান করেন।

  • কুবের সদা সুরাপূর্ণ একটি পানপাত্র তাঁকে প্রদান করেন। 

  • নাগরাজ বাসুকি দেবীকে মহামণিশোভিত একটি নাগহার অর্পণ করেন।  

    এই ভাবেই অসুর নিধন করতে সেরে ওঠেন দেবী দুর্গা। স্বর্গ, মর্ত্য, পাতালের দুর্দশা দূর করতে রণক্ষেত্রে অবতীর্ণা হন দেবী। পুরাণে কথিত, অন্যান্য দেবতারাও দেবী জগন্মাতাকে নানান অলঙ্কার ও অস্ত্র দিয়ে সাজিয়ে দেন। দেবী তখন ভয়ঙ্কর অট্টহাস্য করে  বার বার গর্জন করতে থাকেন। তাঁর সেই অতি ঘোর গর্জনে আকাশ-বাতাস- দশদিক পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তৈরি হয় ভীষণ প্রতিধ্বনি। কেঁপে ওঠে ত্রিলোক। (Religion) 

    আরও পড়ুন :

    যুদ্ধ করতে না-চেয়ে অস্ত্র ছাড়তে চাওয়া অর্জুনকে কী যুক্তিতে রাজি করিয়েছিলেন কৃষ্ণ ?