মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: সাড়ে ৩০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে আজও স্বমহিমায় পুজিত হন দুর্গাপুরের গোপালমাঠের বড় মা । চলুন জেনে নেওয়া যাক, পশ্চিম বর্ধমানের এই পুজোয় কোন কোন বিষয়গুলি একেবারেই ভিন্ন, মন টানে বারবার।
প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে আট গ্রাম সুজোড়া, মেজেডিহি, বনগ্রাম, জগুরবাঁধ, নাগারবাঁধ এইসব গ্রামগুলির একটাই পুজো হত জাঁক জমক করে। প্রায় সত্তর বছর আগে সেই জায়গায় রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠে সেখানেই। ওই আটটি গ্রাম উঠে যায় তখন পার্শ্ববর্তী এলাকায় নতুন গ্রামের নাম দেওয়া হয় গোপালমাঠ। গ্রাম উঠে যাওয়ার সময় মন্দিরের বিগ্রহর কাঠামো দামোদরের জলে ভাসিয়ে দিয়ে আসা হয়।পরবর্তীতে নতুন করে গ্রাম বা বসতি গঠনের পর সেই ঘটক পরিবারের কেউ স্বপ্নাদেশ পান। দামোদর থেকে সেই কাঠামো তুলে নিয়ে এসে, বড় মার বিগ্রহ নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতি বছর তারপর থেকে শুরু হয় পুজো।
পরিবারের সাবাই যারা বাইরে থাকে, তারাও আসে প্রতিবছর। পুজোর চারদিন ঘটকদের কারও বাড়িতে রান্না হয় না, ভোগ হয় দু বেলা, আর নিজেদের মধ্যে আনন্দ হই হুল্লোড় করে কেটে যায় চারদিন। শহরের অন্য পূজো গুলো খুব একটা দেখতে যাওয়া হয় না কারওর। সপ্তমীর সকালে পাল্কিতে দোলা নিয়ে আসা ও বাড়ির মহিলাদের সিঁদুর খেলা সব থেকে আকর্ষণীয় এই পুজোর। সারা বছর গোটা পরিবার অপেক্ষা করে থাকে এই পুজোর চারদিনের জন্য।
আরও পড়ুন, 'নিজেদের স্বার্থে এসেছি..', RG করের মহা সমাবেশে কেন এই দাবি অভিনেত্রী সোহিনী সরকারের ?
শারদ উৎসব শুরু হতে আর কয়েকদিন বাকি। অতিবৃষ্টির পর নীল আকাশে এখন সাদা মেঘের ভেলা। জলাশয়ের পাশে হাওয়ায় দুলছে কাশফুল। সর্বত্রই উৎসবের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। বারোয়াড়ির পাশাপাশি বাড়ির পুজোতে ও চলছে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। হরিপাল থানার নালীকুল বড়গাছিতে ২৯৩ বছরের প্রাচীন সিংহ, বসু মল্লিক ও রায় পরিবারের পুজো ঘিরে পরিবারের সদস্যদের ব্যস্ততা চরমে। পুজোর আয়োজনে যেনও কোনও খামতি না থাকে তা নিয়ে বৈঠক চলছে ঠাকুন দালানে। এখনও প্রাচীন রীতিনীতি ও ঐতিহ্য বজায় রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দেবীর আরাধনা করে থাকেন এই তিনটি পরিবার।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।