প্রসেনজিৎ সাহা ,ত্রিপুরা: ১৮৩০ সালে মহারাজা ঈশান চন্দ্র মানিক্যের শাসনকাল থেকে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর বংশধর বিপীনবিহারী প্রভু গোস্বামী শুরু করেন দুর্গাপুজো। ত্রিপুরার রাজাদের কুলগুরু বিপিন বিহারী প্রভু গোস্বামী।


নিয়ম মেনেই হয়ে আসছে পুজো। সেই অনুযায়ী প্রতি বছর মহারাজা খালি পায়ে ছাতা মাথায় না দিয়ে প্রভু বাড়ির প্রতিমা দর্শনে আসতেন। এখন রাজন্য শাসন বদলেছে কিন্তু প্রথা বদলায়নি। এখনও প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় অন্দরে নিয়ে গিয়ে বরণ করেন রাজপরিবারের বর্তমান সদস্য। সবার প্রথমে রাখা হয় প্রভু বাড়ীর প্রতিমা, তারপরে রাজবাড়ী তথা দুর্গাবাড়ীর প্রতিমা। নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর বংশের ১৩ তম পুরুষ মাধবানন্দ গোস্বামী বর্তমানে পুজো পরিচালনা করেন। ২০০৯ সাল থেকে রাজ্য সরকার এই পুজোর পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব গ্রহণ করে। মৎসপূরাণ অনুসারে বৈষ্ণবীয় রীতি মেনে হয় পুজো।


অপরদিকে, পশ্চিম বর্ধমানে সাড়ে ৩০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে আজও স্বমহিমায় পুজিত হন দুর্গাপুরের গোপালমাঠের বড় মা । প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে আট গ্রাম সুজোড়া, মেজেডিহি, বনগ্রাম, জগুরবাঁধ, নাগারবাঁধ এইসব গ্রামগুলির একটাই পুজো হত জাঁক জমক করে। প্রায় সত্তর বছর আগে সেই জায়গায় রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠে সেখানেই। ওই আটটি গ্রাম উঠে যায় তখন পার্শ্ববর্তী এলাকায় নতুন গ্রামের নাম দেওয়া হয় গোপালমাঠ। গ্রাম উঠে যাওয়ার সময় মন্দিরের বিগ্রহর কাঠামো দামোদরের জলে ভাসিয়ে দিয়ে আসা হয়।পরবর্তীতে নতুন করে গ্রাম বা বসতি গঠনের পর সেই ঘটক পরিবারের কেউ স্বপ্নাদেশ পান। দামোদর থেকে সেই কাঠামো তুলে নিয়ে এসে, বড় মার বিগ্রহ নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতি বছর তারপর থেকে শুরু হয় পুজো।


আরও পড়ুন, 'নবান্ন থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া এলে..', RG কর ইস্যুতে আরও স্পষ্ট কিঞ্জল


 পরিবারের সাবাই যারা বাইরে থাকে, তারাও আসে প্রতিবছর। পুজোর চারদিন ঘটকদের কারও বাড়িতে রান্না হয় না, ভোগ হয় দু বেলা, আর নিজেদের মধ্যে আনন্দ হই হুল্লোড় করে কেটে যায় চারদিন। শহরের অন্য পূজো গুলো খুব একটা দেখতে যাওয়া হয় না কারওর। সপ্তমীর সকালে পাল্কিতে দোলা নিয়ে আসা ও বাড়ির মহিলাদের সিঁদুর খেলা সব থেকে আকর্ষণীয় এই পুজোর। সারা বছর গোটা পরিবার অপেক্ষা করে থাকে এই পুজোর চারদিনের জন্য।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।