কলকাতা: মহাভারতে কৃষ্ণ অর্জুনের বন্ধুত্বের কথা কে না জানে। কৃষ্ণ ছিলেন অর্জুনের সখা, দিক দ্রষ্টা,  নিয়ন্ত্রণ কর্তা, পরামর্শদাতা। অর্জুনের প্রতি কৃষ্ণের উচ্চারিত পরামর্শ গীতায় সংকলিতও রয়েছে। নিজের বিশ্বরূপ দর্শন করিয়ে বন্ধু অর্জুনের কিছু ভ্রম পরিবর্তন করিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। 


কথাতেই আছে ‘হরিহর আত্মা’। বন্ধুত্বের দৃঢ়তা বোঝাতে, গভীরতা বোঝাতে এই শব্দটি বহুল প্রচলিত। অর্থ হল এক-কে অন্যের থেকে আলাদা করা যায় না। তেমন বন্ধুত্বের নিদর্শন হয়ে থেকে গেছে একাধিক পুরাণ। বন্ধুত্ব ধর্ম পালন করতে ত্যাগ করেননি সহযোদ্ধাকে। বরং জীবনের নেতিবাচকতা থেকে উন্নতি করেছে প্রিয় বন্ধুকে।                                                                                                                                                                     


শ্রীমদ্ভাগবত গীতার দশম অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ যেমন বলছেন- 


পরং ব্রহ্ম পরং ধাম পবিত্রং পরমং ভবান্৷


পুরুষং শাশ্বতং দিব্যমাদিদেবমজং বিভুম্৷৷



অর্জুন বললেন- তুমি পরম ব্রহ্ম, পরম ধাম, পরম পবিত্র ও পরম পুরুষ৷ তুমি নিত্য, দিব্য, আদি দেব, অজ ও বিভু। দেবর্ষি নারদ, অসিত, দেবল, ব্যাস আদি ঋষিরা তোমাকে সেভাবেই বর্ণনা করেছেন এবং তুমি নিজেও এখন আমাকে তা বলছ।


আরও পড়ুন, দু:খ-শোক কাটিয়েই এগিয়ে যেতে হয়, গীতায় অর্জুনের জীবনদর্শন বদলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ


অর্জুন সর্বদা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে তার গুরু মনে করতেন এবং জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিতেন। একইভাবে অর্জুন কৃষ্ণের প্রতি বিশ্বাস রেখে কাজ করতেন। এ থেকে বোঝা যায় বন্ধুত্বে বিশ্বাস থাকলে যে কোনো যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। অর্জুন এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বন্ধুত্বও একই শিক্ষা দেয়। 


যেমন গীতায় অর্জুনকে অষ্টাঙ্গ যোগ সম্পর্কে জানান। মনের ভ্রান্তি কী ভাবে দূর করা যায়, তা অর্জুনকে জানান কৃষ্ণ। কর্মযোগ ও জ্ঞান যোগ—এই দুইয়ের মধ্যে তাঁর জন্য কোনটি শ্রেষ্ঠ, তাও প্রিয় সখাকে শিখিয়ে গিয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ।