গীতার ( Gita )  ষষ্ঠ অধ্যায়ে ধ্যানযোগের পথ দেখিয়েছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। (Krishna) কীভাবে ধ্যানে বসবেন, কীভাবে করবেন মনোসংযোগ, তা বলেছেন তিনি গীতায়। কীভাবে আসনে বসে ধ্যানযোগের সাধন করতে হবে , তাও তিনি বলেছেন। সেই সঙ্গে ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে বসা উচিত, সেই সময় কীভাবে মন দেওয়া উচিত। ধ্যান করার সময় কী কী নিয়ম পালন করা উচিত ও কী ভাবে কার ধ্যান করা উচিত তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভগবান। (Gita)


সমং কায়শিরোগ্রীবং ধারয়নচলং স্থিরঃ।


সম্প্রেক্ষ্য নাসিকাগ্রং স্বং দিশশ্চানবলোকয়ন্৷৷ ১৩ 


এর অর্থ হল, ধ্যানে বসার সময় মেরুদণ্ড, মাথা, ঘাড় সমান ও নিশ্চলভাবে স্থির রাখতে হবে। আর নিজের নাকের  অগ্রভাগে চোখ স্থির রাখতে হবে। অন্য কোনও দিকে না তাকিয়ে এই কাজ করতে হবে। 


ভগবানের উপদেশ, ধ্যানে বসতে হবে জঙ্ঘার ওপর। মাথা, গলা ও শিরদাঁড়া একেবারে সোজা রেখে বসতে হবে। কোমর বা পেটের সামনের দিকে ঝুঁকে বসা যাবে না। আবার ডাইনে বা বাঁয়ে হেলে থাকা যাবে না। সামনের দিকে শরীর ঝোঁকা থাকলে চলবে না।  সেই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে, হাড় সোজা রাখতে হবে ধ্যানে বসার সময়। গলাও অন্য কোনওদিকে ঘোরানো, যাবে না। মাথাও স্থির রাখতে হবে অবশ্যই। এইভাবে একটুও এদিক ওদিক শরীর না ঘুরিয়ে ধ্যান করতে হবে । 


ধ্যান করার সময় দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হবে নাকের ডগায়। চক্ষু বন্ধ করে ধ্যান করেন অনেকে। কিন্তু গীতা বলছে, এদিক-ওদিক না তাকিয়ে নাকের ডগার দিকে তাকাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে নাকের ডগায় যেন মনস্থির না হয়। চোখ থাকবে নাকের ডগায়, মন থাকবে ঈশ্বরে। 


 ধ্যানযোগের সাধনে বিঘ্ন ঘটায় ঘুম, আলস্য, ইত্যাদি। মনে করা হচ্ছে, মেরুদণ্ড, মস্তক, গ্রীবা সোজা করে রাখলে আর চোখ খুলে রাখলে আলস্য বা নিদ্রার আসবে না। নাকের ডগায় দৃষ্টি রেখে এদিক-ওদিক না তাকিয়ে ধ্যানে মগ্ন হতে হবে। ধ্যান হল মনের সাধন।   


এছাড়া ভগবান বলেছেন, আসন যেন অতি উঁচু বা অতি নিচু না হয় । কাঠ বা পাথরের আসন নয়, তাতে পায়ে কষ্ট হতে পারে । তাতে ধ্যানে বিঘ্ন আসে। তাই প্রথমে কুশ, পরে মৃগচর্ম, তারপর কাপড় বিছিয়ে কোমল আসলে ধ্যানে বসলে ভাল।