Gita Gyan: শ্রীকৃষ্ণ (Lord Krishna) তাঁর জন্ম ও কর্ম সম্পর্কে অর্জুনকে (Arjun) অবহিত করেছেন জ্ঞানযোগে। গীতার (Gita) চতুর্থ অধ্যায়ে ভগবান বলেছেন, 



অজোঽপি সন্নব্যয়াত্মা ভূতানামীশ্বরোঽপি সন্ ।
প্রকৃতি স্বামধিষ্ঠায় সম্ভবাম্যাত্মমায়য়া

অর্থাৎ, ভগবান জন্মরহিত। তিনি অবিনাশী স্বরূপ এবং সর্বপ্রাণীর ঈশ্বর হওয়া সত্ত্বেও নিজ প্রকৃতিকে অধান করে নিজ যোগমায়ার দ্বারা প্রকটিত হন। 


এর অর্থ, শ্রী কৃষ্ণ জন্মরহিত এবং অবিনাশী। তাঁর জন্ম বা বিনাশ হয় না। তা সত্ত্বেও ভগবান যুগে যুগে কারও গর্ভে  আমি সাধারণ মানুষের মতো জন্ম নেন। তিনি তাঁর কর্তব্য সম্পাদিত করে বিনাশপ্রাপ্ত হন।  বলে প্রতীয়মান হই । ভগবান আরও বলেন, যাঁরা তাঁর অবতার-তত্ত্ব বোঝেন না, তাঁরা ভগবানের সঙ্গে সাধারণ মানুষের মতোই ব্যবহার করেন। ভগবান বিভিন্ন  সময়ে কখনও মৎস্য, কখনও কূর্ম, কখনও বরাহ, কখনও মানুষ রূপে পৃথিবাতে এসেছেন। অনেকেই ঈশ্বরকে চিনতে না পেরে মনে করেছেন, তাঁর জন্ম আর পাঁচ জনের মতোই। আবার ভগবান যখন অন্তর্ধান করেন, তখন তাঁরা মনে করেন তাঁর বিনাশপ্রাপ্তি হয়েছে ।

আসলে ভগবান পৃথিবীতে এসে দিব্য রূপে নানা লীলা করেন।  অনেকেই তাঁকে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষই মনে করেন। তখন তাঁকে কখনও তিরস্কার করেন। মানুষ হয়ত বুঝতেই পারে না যে ইনিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। তিনি তাঁর ইচ্ছেতে পৃথিবীতে আসেন, ইচ্ছে অনুসারে কাজ করেন।  ইচ্ছে অনুসারেই অন্তর্হিত হয়ে যান। তাঁকে অন্য কেউ হত্যা করে না। 


সাধারণ মানুষ আসলে,  প্রকৃতির বশীভূত। প্রত্যেকেই নিজের কর্মফল অনুসারে, জন্ম পায়। মা-বাবা পায়। আর পরিবার পায়। ভগবান নিজেই বলেছেন, তাঁর জন্ম সেভাবে হয় না। তিনি নিজেই ঠিক করেন। তিনি নির্দিষ্ট দিব্য লীলা করার জন্য উপযুক্ত রূপ ধারণ করেন।  ভগবান অন্যান্য জীবের  মতো  কর্মের পরাধীন নন । 


ভগবার নিজেই বলেছেন, ভগবান বলেছেন,
'যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত ।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ৷৷ '
অর্থাৎ যখন যখন পৃথিবীতে ধর্ম সঙ্কটাপন্ন হয়, অধর্ম দাপট দেখায়, তখনই দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালনের স্বার্থে কৃষ্ণ কোনও না কোনও অবতারে পৃথিবীতে আসেন। পরের শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ (Lord Krishna) বলেন, 
'পরিত্রাণায় সাধুনাং চ বিনাশায় দুষ্কৃতাম্ ।  
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে ৷৷ ' 


এখানে ভগবান বলতে চেয়েছেন, পৃথিবীতে অধর্ম মাথাচাড়া দিলে নিরপরাধ, সদাচারী ও  ঈশ্বর ভক্তদের ওপর অত্যাচার করে দুর্বৃত্তরা। যতরকম ছল, কপট, চুরি, ব্যভিচার ইত্যাদি চলতে থাকে। তখন বিশ্বে ধর্মের প্রতিষ্ঠার জন্য ঈশ্বর  এই অধার্মিক খারাপ মানুষগুলির বিনাশ করে।