ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: কথিত আছে, মায়ের কাছে যে যা চাই মা তাঁর ইচ্ছেপূরণ হয়। গ্রামে সমৃদ্ধি ফেরাতে দেবতার শরণাপন্ন হয়েছিলেন গ্রামের রায় পরিবার। শুরু করেছিলেন জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagaddhatri Puja 2023)।  পুজো শুরুর পর গ্রামে ফিরেছে শান্তি ও সমৃদ্ধি বলে দাবি করা হয়।  ফলে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে এবারও জগদ্ধাত্রী পুজোয় মাতলেন বীরভূমের রামপুরহাট থানার দেখুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা।


পুজো শুরুর নির্দিষ্ট দিনক্ষণ বলতে না পারলেও, গ্রামবাসীদের দাবি, প্রায় ৪৫০ বছর আগে গ্রামের রায় পরিবারের ইষ্টদেবতা হিসাবে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেছিলেন।  মায়ের নিত্যপুজোর জন্য গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল ভট্টাচার্য পরিবারকে।  তাদের দৌহিত্ররা আজও বংশ পরম্পরায়  পুজো চালিয়ে আসছেন। পুজোর  উদ্যোক্তা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন,জগদ্ধাত্রীকে ইষ্ট দেবতা হিসাবে পুজো করেন গ্রামবাসীরা। এখানে মাকে যে চাই মা তার মনস্কামনা পূর্ন করে। কোন মেয়ে তার বিয়ের জন্য, আবার কেউ চাকরির জন্য প্রার্থনা মা তাদের প্রার্থনা পূরণ করে। সারাদিন ধরে চলে পুজো, এরপর রাত্রে মায়ের খিচুড়ি ভোগের আয়োজন করা হয়। 


প্রাচীন রীতি মেনে এখানে শুধুমাত্র নবমীর দিন পুজো করা হয়।  ওইদিনই সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী পুজো করা হয়। যেহেতু দ্বারকা নদী উত্তরদিকে বয়ে চলেছে। তাই সাধারণ মানুষের বিশ্বাস দ্বারকা নদীর জল গঙ্গার সমান। সেহেতু  সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কাঁসর, ঘণ্টা, ঢাক ঢোল নিয়ে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকা নদী থেকে সুসজ্জিত ভাবে ঘট ভরে আনা হয়।  তার পরে শুরু হয় পুজো, হয়  বলিদান। কথিত আছে গ্রামের ইষ্ট দেবীর কাছে কেউ মানত করলে তার মনস্কামনা পূর্ণ হয়।  সেই বিশ্বাসে বহু মানুষ মায়ের কাছে মানসিক করে পুজোয় অংশগ্রহণ।  কেউ কেউ প্রতিমা দেওয়ার অঙ্গীকার করে থাকে।  কর্মসূত্রে কিংবা বিবাহ সূত্রে গ্রামের বাইরে থাকা মেয়ে কিংবা পুরুষ সদস্যরা জগদ্ধাত্রী পুজোয় গ্রামে ফেরেন। পুজোয় তাদের অংশগ্রহণে গ্রামে মিলন উৎসবের চেহারা নেয়।  


আরও পড়ুন, শিল্প সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাননি রাজ্যপাল, ১ বছর পূর্ণ করে বললেন..


রীতি ও ঐতিহ্য মেনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পুজো। কয়েকটি জায়গায় ব্যাতিরেকে বেশিরভাগ জায়গাতেই নবমীর দিনেই একসঙ্গে হবে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজো৷জগদ্ধাত্রী পুজোর অষ্টমী তিথি ছিল সোমবার। যেখানে পাঁচদিন যাবত পুজো হয়, সেখানে বেশ কিছু জায়গাতেই অষ্টমী পুজো ও অষ্টমী-নবমী সন্ধিক্ষণে হয়েছে সন্ধিপুজো।