কলকাতা: হিন্দু ধর্মের বিশেষত বৈষ্ণবদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ঝুলন যাত্রা (Jhulan Yatra) বা ঝুলন পূর্ণিমা (Jhulan Purnima)। একাদশী থেকে আরম্ভ করে পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে এই উৎসবের সমারোহ। দোল পূর্ণিমার পরে বৈষ্ণবদের আরও একটি বড় উৎসব ঝুলন।                


বৃন্দাবনে রাধাকৃষ্ণের শৈশব-স্মৃতি, সখা-সখীদের সঙ্গে দোলনায় দোলার লীলাকে কেন্দ্র করে দ্বাপর যুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। মূলত রাধাকৃষ্ণের বর্ষাকালীন প্রেম এবং আবেগের উৎসব ঝুলন। বর্তমানে বৃন্দাবন ছাড়াও মথুরা, নবদ্বীপ, মায়াপুর এবং বিশ্বের যেখানে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের অবস্থান, সেই সব জায়গায় এই উৎসব আড়ম্বরের সহিত পালিত হয়।


শাস্ত্রে বলা হয়েছে-


"অনুগ্রহায় ভূতানাং মানুষং দেহমাশ্রিতঃ।
ভজতে তাদৃশীঃ ক্রীড়াঃ যাঃ শ্রুত্বা তৎপরো ভবেৎ।।" 


ভগবান ভক্ত অভক্ত নির্বিশেষে সকলকে অনুগ্রহ করবার জন্য গোলকধাম থেকে ভূলোকে এসে লীলা করেন।


ঝুলন যাত্রা কবে? 


গুপ্তপ্রেশ পঞ্জিকা মতে, ৮ ভাদ্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৬ আগস্ট ২০২৩ সাল, শনিবার ঝুলনযাত্রা শুরু। শেষ হবে ১২ ভাদ্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৩০ আগস্ট, ২০২৩ সাল, বুধবার।


বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে, একাদশী তিথি আরম্ভ ৯ ভাদ্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। সময়- রাত্রি ঘ ১২ টা ১০ মিনিট। পপ্রদোষে ইন্দ্রাদিদেব বিহিত শ্রী কৃষ্ণের ঝুলনযাত্রারম্ভ। একাদশী তিথি শেষ ১০ ভাদ্র, রবিবার, ২৭ আগস্ট, রবিবার। সময় – রাত্রি ৯ টা ৩৩ মিনিট। 


বৃন্দাবনে একটি বিখ্যাত প্রবাদ আছে যে বৃন্দাবনে প্রতিদিনই উৎসব। এই কারণে, লোকেরা সর্বদা বৃন্দাবনের মন্দিরে এসে ভগবানের দর্শনের অপেক্ষায় থাকে। এর পাশাপাশি ব্রজের সমস্ত উৎসবও সারা বিশ্বের ভক্তদের আকর্ষণ করে। শ্রী রাধারমণ মন্দির বৃন্দাবনের প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে একটি। এর সঙ্গে এই মন্দিরটি সপ্ত দেবালয়ের অন্তর্ভুক্ত। এই মন্দিরে হরিয়ালি তিজ থেকে শুরু হয়েছে ভগবানের ঝুলন মহোৎসব।


আরও পড়ুন, শনিবারে সাড়ে সাতির প্রভাব, কোন উপায়ে কাটবে গ্রহদোষ?


এই উৎসবে প্রতি তৃতীয় দিনে দেবতাকে আলাদা দোলনায় বসানো হয়। এর পাশাপাশি, এই দিনগুলির ঈশ্বরের বহু অলৌকিক শোভা শুধুমাত্র এই ঝুলন মহোৎসবের সময় দেখা যায়। চন্দ্রকুমার গোস্বামী জানান, ঝুলন উৎসবে ঈশ্বরকে বিশেষ ভোগও দেওয়া হয়। মন্দির সেবায়ত রাধাকান্ত গোস্বামী জানান, ভগবান শ্রী রাধারমণের হরিয়ালি তীজ ঝুলন মহোৎসব শুরু হয়। যাকে হিন্দোল উৎসবও বলা হয়। এটা চলবে রক্ষা বন্ধন পর্যন্ত।