নৈহাটি : "২০১৮ সালে কালীপুজোর (Kali Puja) সময় মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। দেখলাম, দুই জন ভদ্র মহিলা এসে হাউহাউ করে কাঁদছেন। আমি বললাম, কী হল এত কাঁদছেন ? মা-কে দর্শন করুন। মায়ের কাছে চান। একজন বললেন, আমার একটা চাকরি আটকে আছে। মেট্রো রেলের চাকরি। আমি বললাম, মায়ের কাছে চান। পরের বছর আমি এই জায়গায় এখানে দাঁড়িয়ে থাকব। আপনি আমার সঙ্গে দেখা করবেন এবং চাকরি নিয়ে। আমি বলেছি এবং সেটা সত্যিও হয়েছে। সেই ভদ্র মহিলা পরের বছর এসে জানান, তাঁর চাকরি হয়ে গেছে।" নৈহাটির বড় মা (Naihati Boro Ma) কালীর এমনই গায়ে কাঁটা দেওয়া কাহিনি শোনাচ্ছিলেন পুজো কমিটির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য। আর বড় মা-র এই মহিমার কারণেই ফি বছর দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার ভক্ত।
"এ পুজো শুরু করেছিলেন ভবেশ চক্রবর্তী। মন্দিরের পাশেই তাঁর বাড়ি। উনি এবং ওঁর বন্ধুরা নবদ্বীপ ঘুরতে গিয়েছিলেন। তিন-চার জন বন্ধু মিলে। নবদ্বীপে রাসপুজোয় অনেক বড় বড় মূর্তি হয়। সেইসব মূর্তি টেনে টেনে ভাসান দেওয়া হয়। উনি সেখানে গিয়ে এসব দেখেন। এরপর নৈহাটি ফিরলে, ওঁকে স্বপ্নে দেখা দেন মা। যে, আমাদের বাড়ির পুজোটা বড় করা যেতে পারে। সেটা বড় করা গেলে নৈহাটির বুকে একটা বড় উচ্চতার পুজো হবে। তখন ওঁর মনে হয়, এর উচ্চতা হবে ২২ ফুট এবং ১৪ হাত। তখন থেকেই এই পুজোর শুরু। ঠিক লক্ষ্মীপুজোর দিন, একটা কাঠামোর ওপরে, চাকা দেওয়া একটা ট্রলি তৈরি করেন। সেই ট্রলিতে মা-কে দাঁড় করানো হয়। সেরকম লক্ষ্মীপুজোর দিন কাঠামোর পুজো হয় এখানে। সেদিন থেকেই বাঁশ পড়ে যায় এবং মা-কে তৈরি করা হয়। ২০১২ সালে ওঁর ছেলের হাত থেকে আমাদের হাতে দায়িত্ব আসে। ২০১২ সালের পর থেকে নৈহাটির মানুষ আর বড় কালী বলেননি, বড় মা বলতে শুরু করেন।" জানান তাপস ভট্টাচার্য।
কমিটির সভাপতি অশোক চ্যাটার্জি জানান, কথায় বলে, বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধুতে রূপান্তরিত করা। আমরাও ঠিক সেভাবেই, কেউ একটা টিকলি দান করেছেন, কেউ একটা চোখ দান করেছেন, সেসব এক জায়গায় করে আজ ১০০ ভরি সোনায় মা-কে অলঙ্কৃত করে মা-কে গৃহপ্রবেশ করিয়েছি।