নয়াদিল্লি: অসমের গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরে (Kamakhya) প্রতিবারের মতো এবারও মায়ের সাড়ম্বর আরাধনা। নীলাচল পাহাড়ের কোলে ব্রহ্মপুত্রের তীরে এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনী। শ্রেষ্ঠ সতীপীঠ হিসেবে পরিচিত কামাখ্যা। একান্ন পীঠের অন্যতম কামাখ্যায় মায়ের যোনি পড়েছিল বলে কথিত। সারা দেশ থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন।


মায়ের সাড়ম্বর আরাধনা: এদিন দেবী মাকে মহাস্নান করিয়ে, ষোড়শপচারে ভোগ নিবেদন করা হয়। এরপর মহা বলিদান। মাছ ভোগ ও বলিদানের মহপ্রসাদ ভোগও নিবেদন করা হয় মাকে। সকাল ৭টার পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। এখানে শুধু দর্শন নয়, মাকে স্পর্শ করে পুণ্যলাভ করতে আসেন ভক্তরা। কথিত আছে, এখানে না এলে তন্ত্রসাধনা সম্পূর্ণ হয় না।কলিযুগের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত মা কামাখ্যার মন্দির। মায়ের মূল মন্দির তৈরি করেছিলেন কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণ। বাকি অংশের নির্মাণ করেন অহম রাজারা। কামাখ্যা মন্দিরে এদিন রাত পর্যন্ত মহাযজ্ঞ চলে। মন্দিরের মধ্যে ১০টি নামী আখড়ায় প্রথা মেনে যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। কথিত আছে, বশিষ্ঠ মুনি এক সময় কামাখ্যায় যজ্ঞ করেছিলেন। পুজো ও যজ্ঞ দেখতে ভক্তের সমাগম মন্দিরে।


আজ কালীপুজো: আজ শক্তির আরাধনা। কলকাতা থেকে কামাখ্যা। বীরভূম থেকে বারাসাত। কালীপুজো উপলক্ষ্যে দিকে দিকে সাড়ম্বর আয়োজন। আলোর উৎসবে মাতোয়ারা তিলোত্তমা কলকাতাও। দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও থিমের হিড়িক। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির গভীর রাতে যোগিনী পরিবৃতা হয়ে আবির্ভূতা হন মা কালী৷ জগতে কল্যাণ এবং শান্তি স্থাপনের জন্য ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন৷ তিনি অসুখ বিনাশিনী৷ মহা শক্তিধর শুম্ভ-নিশুম্ভের হাত থেকে ত্রিলোককে রক্ষা করতেই দেবীর সৃষ্টি৷ নরমুণ্ডই দেবীর অলঙ্কার৷ যুদ্ধে পরাজিত সেনাপতিদের মুণ্ডের মালা মা কালীর কণ্ঠের শোভা৷ বলা হয়, পঞ্চাশটি মুণ্ডের এই মালা আসলে জ্ঞানের প্রতীক৷ যে সেনাপতি তাঁর চুল ধরে অপমান করেছিল, তাঁর মুণ্ড দেবী হাতে ধরে থাকেন৷ মৃত সেনাপতিদের হাতের পাতা দেবী কোমরে ধারণ করেন৷ শাস্ত্রমতে এই করতলও জ্ঞানের প্রতীক৷ ভুল করে স্বামী মহাদেবের গায়ে পা তুলে ফেলায় লজ্জিতা রণে উন্মত্ত দেবী৷


ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজোর আয়োজন: অন্যদিকে, একান্ন পীঠের অন্যতম দেবী ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির। কালীপুজো উপলক্ষ্যে মন্দিরে ভক্তের ঢল ত্রিপুরার গোমতী জেলার উদয়পুরের মাতারবাড়ির মন্দিরে। কথিত আছে, এখানে সতীর ডান পায়ের গোড়ালি পড়েছিল। ৫২২ বছরের পুরনো ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির ঘিরে প্রতিবার দীপাবলি উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়। ত্রিপুরার মহারাজা মহারাজা ধন্য মাণিক্য ১৫০১ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে মন্দিরের প্রধান সেবায়েত গোমতীর জেলাশাসক। তবে পুজোর অর্ঘ্য থেকে আহুতি সব কিছুই হয়, রাজপরিবারের বর্তমান প্রতিনিধি প্রদ্যুৎকিশোর দেববর্মনের নামে।


আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: মহালক্ষ্মী রূপে শ্যামা মায়ের আরাধনা, কড়া নিরাপত্তা কালীঘাটে