পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের নানা রীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানুষের নানা বিশ্বাস। শোনা যায়, মন্দিরের নিয়ম বহির্ভূত কিছু ঘটলে তার ফল নাকি ভাল হয় না। ভক্তদের বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিরাপত্তার বিষয়টিও। সম্প্রতি আবার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে, যা শ্রী মন্দিরের গর্ভগৃহের। দেখে মনে হচ্ছে ভেতরের ‘রত্ন সিংহাসন’ থেকে তোলা এই ছবিটি।  মন্দিরের ভেতরে যে কোনও রকম ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ। তবে কোন ফাঁক দিয়ে চলছে আইন ভাঙা, কাদের সান্নিধ্যে ঘটছে এসব, উঠছে প্রশ্ন। 

Continues below advertisement

odishatv.in তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি, ‘Ashirbad945’ নামের এক ইউজার এই ছবিটি ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন এবং পরে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট হিসেবে শেয়ার করা হয়। ভাইরাল হওয়া এই পোস্টটি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।  প্রশ্ম উঠছে, একাধিক  নিরাপত্তা বলয় , চেকিং সত্ত্বেও এমনটা কীভাবে ঘটছে। মন্দিরের ভেতর ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ । এত সতর্কতা সত্ত্বেও কীভাবে কেউ মোবাইল ফোন বা ক্যামেরা নিয়ে মন্দিরের এত সুরক্ষিত জায়গায় ঢুকে পড়ল, উঠছে প্রশ্ন।  

odishatv.in তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি, ছবিটি রত্ন সিংহাসনের খুব কাছ থেকে তোলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যা মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী   কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই ঘটনা ফের প্রশ্ন তুলে দিল মন্দিরের স্ক্রিনিং, ভিড় পর্যবেক্ষণ এবং  নজরদারি নিয়ে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছবিটি কীভাবে তোলা হয়েছে এবং এটি সম্প্রতি তোলা হয়েছে নাকি অনেক আগে তোলা, পরে আপলোড করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করার জন্য একটি তদন্ত প্রয়োজন। তবে এই প্রথম নয়। গত কয়েক মাস ধরেই এমন নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা একাধিক ঘটছে। নভেম্বরে, শ্রীমন্দিরে একদিনেই দুটি নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে।  জাজপুরের একজন ভক্ত সেবকের ছদ্মবেশে গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন এবং গোপাল বল্লভ পূজার পর রত্ন সিংহাসন স্পর্শ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। একই দিনে, আহমেদাবাদের আরেকজন ভক্ত জগমোহন কক্ষের ভেতরে লুকানো ক্যামেরা লাগানো চশমা পরা অবস্থায় ধরা পড়েন। মন্দির কর্তৃপক্ষ দর্শনের সময় ডিভাইসটি শনাক্ত করে এবং তাকে আটক করে সিংহদ্বার পুলিশকে হস্তান্তর করে। এর আগে অক্টোবরে, একজন সেবককেও মন্দিরের ভেতরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ছবি তোলার অভিযোগে ধরা হয়েছিল।

Continues below advertisement

জগন্নাথ মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী, মন্দিরের ভেতরে অননুমোদিত ফটোগ্রাফির জন্য সর্বোচ্চ দুই মাসের কারাদণ্ড এবং ১,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। তা সত্ত্বেও যেভাবে পরপর নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, তাতে চিন্তিত আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন। তাঁর মতে,এভাবে নিয়ম ভেঙে ছবি তোলা হলে তার জন্য আরও কঠোর শাস্তি ধার্য করা দরকার। এমন আইনের আওতায় ফেলা হোক যাতে অপরাধটি জামিন অযোগ্য ধারার আওতায় পড়ে। সেই সঙ্গে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হয়।  তবে এই ঘটনায়  কোনো এফআইআর হয়েছে কি না জানা যায়নি।