পুরী : জগন্নাথদেবের রথের নাম ‘নন্দীঘোষ’। রথের সারথির নাম দারুক। রথে  থাকে ১৬ টি চাকা। চাকার পরিধি ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি। কথিত আছে, এই রথের নাম দেন স্বয়ং ইন্দ্র। ছোট-বড় আকারের মোট ৮৩২টি কাঠের টুকরো দিয়ে এই রথ নির্মাণ করা হয়। জগন্নাথ দেবের রথের উচ্চতা সাড়ে তেরো মিটার অর্থাত্‍ ৪৫ ফুট। 



প্রতিটি চাকারই একটি বিশেষ তাত্‍পর্য রয়েছে। কথিত আছে, জগন্নাথদেব প্রকট হওয়ার আগে ১৬টি উপাদান দিয়ে পৃথিবী নির্মাণ করেন। চন্দ্রের যে ১৬ কলার কথা আমরা শুনে থাকি, সেটা আসলে চাঁদ ১৬টি কলার পরিক্রমণের মধ্যে দিয়ে একটি কালচক্র সম্পূর্ণ করে। জগন্নাথ দেবের রথের চাকাও সেই ১৬টি কলারই প্রতীক। 


রথে জগন্নাথদেবের পার্শ্বদেবতা হিসেবে নয়জন দেবতা থাকেন। তাঁরা হলেন, গোপীকৃষ্ণ, গোবর্ধন, রাম, নারায়ণ, ত্রিবিক্রম, বরাহ, রুদ্র, নৃসিংহ এবং হনুমান। পার্শ্বদেবতার সঙ্গে মুনি-ঋষিরাও থাকেন।  জগন্নাথের রথের চূড়ায় যে ধ্বজা লাগানো থাকে, তার নাম ত্রৈলক্য মোহিনী। রথের প্রতিটি চাকা হলুদ রঙের হয়। রথের কাঠামো লাল-হলুদ কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে। চারটি ঘোড়ার নাম শঙ্খ, বলাতক, শ্বেত ও হরিদাক্ষ। রথের সারথির নাম দারুক।  


সাধারণ ভাষায় আমরা বলি রথের দড়ি। কিন্তু পুরাণ মতে, যে রশি দিয়ে রথ টানা হয় সেটা আসলে শঙ্খচূড় নামেন এক সাপ। জগন্নাথের রথের রক্ষক হলেন গরুড়। একবার রথের রশিতে টান পড়লেই গুন্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশে গড়াতে শুরু করে রথ। সবার আগে থাকে বলরামের রথ, তারপর সুভদ্রা এবং সবার শেষে থাকে প্রভু জগন্নাথের ‘নন্দীঘোষ’।       


কথায় বলে, জগন্নাথদেবের শ্রীমন্দিরে বিশ্বনাথের দর্শন জগন্নাথ দর্শনেরই সমান। যেসব পুণ্যার্থীরা পুরীর মন্দিরে আসেন, তাঁরা প্রথমে শিবের দর্শন করেন, তারপর জগন্নাথ। এর অন্যথা হওয়ার জায়গা নেই।  সৈকত-শহর পুরীর রথযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমন নানা কিংবদন্তী। অন্যান্য অনেক জায়গাতেই এখন মহাসমারোহে রথযাত্রা পালিত হয়। তবুও পূণ্যভূমি পুরীর মাহাত্ম্য স্বতন্ত্র। ভক্তদের বিশ্বাস, রথের রশিতে হাত ছোঁয়ানো না হলেও, দূর থেকে যাঁরা প্রার্থনা করেন, তাঁরাও ঈশ্বরের আশীর্বাদ পান। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।   


আরও পড়ুন : 


আজই লক্ষ্মীদেবীর আশীর্বাদে নতুন চাকরির যোগ এই রাশির, টেনশনও হবে দূর, কেমন কাটবে আপনার দিন?