কলকাতা: প্রতিবছর আষাঢ় পূর্ণিমায় পালিত হয় গুরু পূর্ণিমা (Guru Purnima)। সনাতন ধর্মের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসকারী মানুষরা অত্যন্ত ভক্তি সহকারে এই পূর্ণিমা পালন করেন। এই বছর গুরু পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে ২০ জুলাই বিকেল ৫.৫৯ মিনিটে আর শেষ হচ্ছে ২১ জুলাই দুপুর ৩ টে ৪৬ মিনিটে। মূলত শিষ্যের জীবনে গুরুর মাহাত্ম্য বোঝানোর জন্যই এই পূর্ণিমা পালন শুরু হয়েছিল।


পৌরাণিক মতে, মহর্ষি বেদব্যাস ছোটবেলা থেকে আধ্যাত্মিকতার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। ভগবানের ধ্যানে মগ্ন হওয়ার জন্য তিনি নির্জনে বনে গিয়ে তপস্যার করার অনুমতি চান বাবা-মায়ের কাছে। কিন্তু, তাঁরা সেই অনুমতি দিতে চান না। পরে ব্যাসের অনঢ় মনোভাবের কাছে হেরে গিয়ে শর্তসাপেক্ষে তাঁকে বনে যাওয়ার দেন। মা শর্ত দেন, তপস্যা করার সময়ে কোনও ভাবে যদি বাড়ি ও পরিবারের কথা মনে পড়ে তাহলে বেদব্যাসকে ফের বাড়িতে সংসারের মধ্যে ফিরে আসতে হবে। কিন্তু, বেদব্যাসের আর সংসারের প্রতি কোনও টান ছিল না। তাই বাড়ি ফিরে আসা আর হয়নি তাঁর।


ধর্মীয় বিশ্বাস, তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করার পাশাপাশি সংস্কৃত ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠেন ব্যাস। বেদকে আরও বাড়ানোর পাশাপাশি মহাভারত, ১৮টি মহাপুরাণ ও ব্রক্ষ্মসূত্র সহ একাধিক ধর্মীয় গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। মনে করা হয় আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় নিজের শিষ্যদের ভাগবত পুরাণ সম্পর্কে শিক্ষিত করেছিলেন বেদব্যাস। তার স্মৃতি মাথায় রেখে ব্যাসের পাঁচজন শিষ্য আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিকে গুরু পূর্ণিমা হিসেবে পালন করতে শুরু করেন। তাই একে ব্যাস পূর্ণিমায় বলা হয়। মনে করা হয় এই দিন থেকেই ধুমধামে প্রচলন হয় গুরু পুজোর। শাস্ত্রে দেব-দেবীদের থেকেও গুরুকে বেশি মর্যাদা ও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আজও মহাসমারোহে গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়ে আসছে। মনে করা হয়, এই দিন যাঁকে আপনি গুরু হিসেবে মান্য করেন তাঁর পুজো করে আশীর্বাদ নিলে জীবন থেকে বাধা বিপত্তি দূর হয়ে সফলতার রাস্তা খুলে যায়। গুরু পূর্ণিমার দিনই গৌতম বুদ্ধ উত্তরপ্রদেশের সারনাথ তাঁর শিষ্যদের ধর্মোপদেশ দিয়েছিলেন। তাই এই দিন স্মরণ করা হয় তাঁকে। সেই সঙ্গে সনাতন ধর্মে বৃহস্পতি গ্রহকেও গুরু বলে মান্য করা হয়। তাই দেবতাদের গুরু হিসেবে পূজিত বৃহস্পতিরও আরাধনা হয় গুরু পূর্ণিমার পবিত্র তিথিতে।       


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Bipodtarini Puja: বিপত্তারিণী পুজোর দিন কোন কাজ করতে নেই? কী করলে পড়বেন বিপদে