কলকাতা: ব্রহ্মার মানসকন্যা সরস্বতী৷ এক হাতে তাঁর বীণা, অন্যহাতে পুস্তক৷ তাই পুস্তকের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক সকলেই ব্যস্ত থাকে তাঁর আরাধনায়৷ দেবীভাগবত পুরাণ অনুসারে জানা যায়, পরম কুস্মন্দেরে প্ৰথম অংশে দেবী সরস্বতীর জন্ম। তিনি বিষ্ণুর জিহ্বাগ্র থেকে উৎপন্ন হন। সরস্বতী বাক্য, বুদ্ধি, বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সকল সংশয় ছেদকারিণী ও সর্বসিদ্ধিপ্রদায়িনী এবং বিশ্বের উপজীবিকা স্বরূপিনী।                                           

  


পুরাণ অনুসারে, প্রথমে ব্রহ্মা দেবী সরস্বতীর পুজো করেন। পরে তার পুজো জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়। সরস্বতী শুক্লবর্ণা, পীতবস্ত্রধারিণী এবং বীণা ও পুস্তকহস্তা। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে জানা যায়, তিনি নারায়ণের থেকে সৃষ্টি হন তাই তিনি নারায়ণকে স্বামী হিসেবে ভাবতে লাগেন। পরে তিনি গঙ্গার দ্বারা অভিশাপ পান ও পুনরায় শিবের চতুর্থ মুখ থেকে সৃষ্টি হন ও ব্রহ্মাকে স্বামীরূপে গ্রহণ করেন। আর এরপরই মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর পুজো প্রবর্তন করেন শ্রী কৃষ্ণ, এমনটাই কথিত আছে। 


আরও পড়ুন, সপ্তাহের এই দিনগুলিতে ধূপকাঠি জ্বালাবেন না! বাড়বে ঋণ, দোষের ভাগীদারও হবেন


কিন্তু সরস্বতী দেবী শুক্লবর্ণা কেন?


জানা যায়, শুক্লবর্ণ অর্থাৎ সাদা হল ভাল গুণের প্রতীক, স্বচ্ছতা র প্রতীক, নির্মলতার প্রতীক। আবার অন্যভাবে জানা যায়, জ্ঞানময়ী সর্বশুক্লাদেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী জ্ঞানে গুণান্বিত বলে তাঁর গায়ের রঙ শুক্লবর্ণ অর্থাৎ দোষহীনা অর্থাৎ যার কোন দোষ নেই।


একদিকে দেবী সরস্বতী পবিত্রতার মূর্তি। আর অন্যদিকে, তিনি জ্ঞানদান করেন বলে তিনি আবার ‘জ্ঞানদায়িনী’ও। জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর বাহন রাজহংস। জানা যায়, হাঁস অসারকে ফেলে সার গ্রহণ করতে পারে। কাদায় মিশ্রিত স্থান থেকে তার খাদ্য খুঁজে গ্রহণ করতে পারে একমাত্র হাঁসই। দুধ ও জলের মিশ্রণ থেকে জল ফেলে শুধু দুধটুকুও গ্রহণ করতে পারে হাঁস।


দেবী সরস্বতীর সঙ্গে পূজিত হয়ে সবাই যেন অসার, অকল্যাণকরকে পরিহার করে নিত্য পরমাত্মাকে গ্রহণ করে এবং পারমার্থিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে তারই শিক্ষা দেয় হাঁস। আর তাই দেবী হংসবাহনা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে