শ্রীহরিকোটা : বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে দিনকয়েক আগেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে সফ্ট ল্যান্ডিং করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ভারত। সেই সাফল্যের উচ্ছ্বাস এখনও দেশবাসীকে মাতিয়ে রেখেছে। এরই মধ্যে ভারতের মুকুটে জুড়ল আরও একটি পালক। আদিত্য L1-এর উৎক্ষেপণ করল ISRO।


আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার রবির-রহস্য ভেদে পাড়ি দিল আদিত্য। শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (PSLV) XL-এ চেপে ভারতের প্রথম সোলার স্পেস অবজারভেটরি মিশনের সূচনা হল। পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে একটি হ্যালো কক্ষপথে অবস্থান করবে আদিত্য। আদিত্য L1 পরীক্ষা করবে সূর্যের  পৃষ্ঠদেশ। সৌর ঝড় পৃথিবীর উপর কী কী প্রভাব ফেলতে পারে তা জানার চেষ্টা চালাবে ইসরোর সৌরযান। 


কিন্তু, আর কী লক্ষ্য রয়েছে এই মিশনের ?


এই মিশনের লক্ষ্য সৌর কার্যকলাপ এবং  মহাকাশ আবহাওয়ার উপর তাদের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা। সূর্যের উপরের বায়ুমণ্ডল এবং সৌর বায়ুর সঙ্গে এর যোগাযোগও পরীক্ষা করা হবে।


 






সৌর বায়ু কী ?


নাসার মতে, সৌর বায়ু হল কণা এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের একটি ধ্রুবক প্রবাহ যা সূর্য থেকে নির্গত হয়। এই সৌর বায়ু সমগ্র সৌরজগৎ জুড়ে প্রবাহিত হয় এবং গ্রহের পৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারে যদি না তা বায়ুমণ্ডল বা চৌম্বক ক্ষেত্র বা উভয়ের দ্বারা লক্ষ্যচ্যুত হয়।


পৃথিবীতে, চৌম্বক ক্ষেত্র আমাদের সৌর বায়ু থেকে রক্ষা করে। কিন্তু কখনও কখনও যখন সৌর বায়ু তীব্র হয়, তখন তা ফুটো করে দেয় এবং মেরুর কাছে মেরুপ্রভা বা আকাশে দৃশ্যমান আলোকচ্ছটা সৃষ্টি করতে পারে। যখন এটি চাঁদে আসে, তখন পাতলা বায়ুমণ্ডলের হওয়ায় সৌর বায়ু সরাসরি তার পৃষ্ঠে আঘাত করে। চাঁদের পৃষ্ঠজুড়ে চৌম্বক ক্ষেত্রের ছোট বুদবুদে শুধুমাত্র সামান্য বিচ্যুতি ঘটে। নাসা বলেছে "এই বোমা-নিক্ষেপে এমন উপাদান জমা হয় যা জল তৈরি করতে পারে।"


সৌর বায়ু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা কেন গুরুত্বপূর্ণ ?


ISRO-এর আদিত্য-L1 মহাকাশযান সাতটি পেলোড বহন করছে। যার মধ্যে আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকেল এক্সপেরিমেন্ট (ASPEX) নামে একটি পেলোড রয়েছে। সৌর বায়ুর গঠন এবং গতিশীলতা পরিমাপ করার জন্য এই পেলোডকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।


ISRO-র মতে, সৌর বায়ু এবং অন্যান্য বিস্ফোরক সৌর ঘটনা, যেমন- করোনাল মাস ইজেকশন (CME) মহাকাশের প্রকৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে। যখন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র CME -র সঙ্গে যোগাযোগ করে, তখন আমাদের গ্রহের কাছে চৌম্বকীয় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এটি স্যাটেলাইট বা উপগ্রহের মত মহাকাশ সম্পদের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।


আরও পড়ুন ; মিশন সূর্য ! শ্রীহরিকোটা থেকে ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট L1 এর উদ্দেশে পাড়ি দিল Aditya L1