নয়া দিল্লি : এই সুবিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে আমরা কি একা ? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে নতুন একটি আবিষ্কার সেই কৌতূহলে সলতে পাকিয়েছে।


মহাকাশে নজর রাখার কাজে কেপলার টেলিস্কোপের ব্যবহার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র। নাসার অবসরপ্রাপ্ত সেই টেলিস্কোপ সাতটি গ্রহ-সম্বলিত একটি যুগান্তকারী জগতের সন্ধান পেয়েছে। দেখা গেছে, প্রতিটি গ্রহ তাদের কেন্দ্রস্থানীয় নক্ষত্রের কাছ থেকে আমাদের সৌরজগতের যে কোনও গ্রহের চেয়ে বেশি দীপ্তিশীল তাপ গ্রহণ করছে।


Kepler-385 নামের এই অসাধারণ সিস্টেমটি এককথায় অনন্য। কারণ, নতুন আবিষ্কৃত এই সাতটি গ্রহই পৃথিবীর চেয়ে বড়, কিন্তু নেপচুনের চেয়ে ছোট। যা আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের থেকে আলাদা করে রেখেছে। Kepler-385 হল সেই অল্প পরিচিত প্ল্যানেট সিস্টেম বা গ্রহমণ্ডল যার মধ্যে ছয়টিরও বেশি গ্রহকে ইতিমধ্যেই যাচাই করা হয়েছে বা গ্রহ-মর্যাদার (টেলিস্কোপে ধরা পড়া সম্ভাব্য গ্রহ, যার অস্তিত্ব এখনও প্রমাণিত হয়নি। অন্যান্য দুটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের পর তবে গ্রহ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়) দাবিদার হয়ে রয়েছে। এই অসাধারণ আবিষ্কারটি নতুন কেপলার ক্যাটালগের মধ্যে রয়েছে, যাতে ৭০০-র বেশি মাল্টি-প্ল্যানেট সিস্টেম সহ প্রায় ৪ হাজার ৪০০টি প্ল্যানেট ক্যান্ডিডেট বা গ্রহ-প্রার্থী রয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত NASA-র Ames Research Center-এর গবেষক তথা বিজ্ঞানী জ্যাক লিসুরের দাবি,  Kepler গ্রহমণ্ডলের সম্ভাব্য গ্রহ এবং এখনও পর্যন্ত তাতে মেলা সব উপাদানের নিখুঁত তালিকা তৈরি করেছেন তাঁরা।


Kepler-385 সিস্টেমের কেন্দ্রস্থলে সূর্যের মতো একটি নক্ষত্র রয়েছে, যা আমাদের সূর্যের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বড় এবং ৫ শতাংশ বেশি গরম। দু'টি অভ্যন্তরীণ গ্রহ, পৃথিবীর থেকে যা সামান্য বড়, সম্ভবত পাথুরে এবং পাতলা বায়ুস্তর ধারণ করতে পারে। অন্য পাঁচটি গ্রহ যথেষ্ট বড়, প্রতিটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর আকারের প্রায় দ্বিগুণ এবং মোটা বায়ুমণ্ডলে আবৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।



প্রায় ৯ বছর ধরে গ্রহদের নিয়ে ফলপ্রসূ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৮ সালে শেষ হয় নাসার Kepler মিশন। মহাকাশ-পর্যবেক্ষণের এই টেলিস্কোপ হাজার হাজার গ্রহের সন্ধান পেয়েছে। অনেকেরই নিজস্ব নাম আছে। এই কেপলার টেলিস্কোপের হাত ধরে জমা হয়েছে বহু তথ্য, যা নিয়ে এখনও চর্চা চলছে। সেই কাজ করতে গিয়েই, কেপলারের তথ্য-মহাসাগর থেকে খোঁজ মিলেছে সাত গ্রহের মণ্ডল। যার নক্ষত্রের নাম Kepler-385। ৪ হাজার ৬৭০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এটি।