নয়াদিল্লি: রাতের আকাশে আজ থেকেই দর্শন মিলবে পৃথিবীর দ্বিতীয় উপগ্রহের। আগামী দু'মাস পৃথিবীর ন্যাওটা হয়েই থাকবে ক্ষণস্থায়ী এই মহাজাগতিক বস্তু। তবে আকারে যেহেতু ছোট এবং অনুজ্জ্বলও, তাই খালি চোখে সেটিকে দেখা যাবে না আকাশে। সাধারণ বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপেও ধরা দেবে না। বিজ্ঞানী এবং মহাকাশপ্রেমীদের কাছে যে পেশাদার সরঞ্জাম থাকে, তাতে চোখ রাখলেই চাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বীর দর্শন মিলবে। পাশাপাশি, বিজ্ঞানীরাও অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ থেকে তোলা ছবি প্রকাশ করবেন। (Asteroid 2024 PT5)


Asteroid 2024 PT5-কেই পৃথিবীর দ্বিতীয় উপগ্রহ বা দ্বিতীয় চাঁদ বলে উল্লেখ করছেন বিজ্ঞানী। 2024 PT5 আসলে একটি গ্রহাণু। আয়তন প্রায় ৩৩ ফুট। ২৯ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ রবিবারই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আওতায় ঢুকে পড়ছে সেটি। ফলে চাঁদের মতো সেটিও পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরপাক খাবে আপাতত। আগামী ২৫ নভেম্বর সেটি পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ শক্তি প্রভাবিত অঞ্চল থেকে বেরিয়ে যাবে। অর্থাৎ আগামী দু'মাস পৃথিবীর উপর একার অধিকার থাকবে না চাঁদের, তাতে ভাগ বসাবে 2024 PT5. (Earth Second Moon)


2024 PT5 গ্রহাণুটি আসলে অর্জুন গ্রহাণু বলয়ের বাসিন্দা। পৃথিবীর অনুরূপ পাথর, মহাজাগতিক বস্তু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সেখানে। মহাকাশে নজরদারি চালাতে গিয়ে গত ৭ অগাস্ট NASA-র Asteroid Terrestrial-Impact Last Alert System (ATLAS) খোঁজ পায় 2024 PT5 গ্রহাণুটির। 
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই দু'মাস পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে বেড়াবে ওই গ্রহাণুটি। তবে সম্পূর্ণ ভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণও করবে না 2024 PT5. ২৫ নভেম্বরের পর পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আওতায় থেকে বেরিয়ে যাবে। তার পর সূর্যকেই প্রদক্ষিণ করবে ওই গ্রহাণুটি। স্বল্পমেয়াদি উপগ্রহটিকে চাক্ষুষ করতে মুখিয়ে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।



American Astronomical Society জানিয়েছে, পৃথিবীর আশেপাশে যে সমস্ত মহাজাগতিক বস্তুসমূহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, তারা অশ্বক্ষুরাকৃতি পথে আনাগোনা করে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রভাবিত অঞ্চলে ঢুকে পড়লে উপগ্রহের মতো আচরণ করতে শুরু করে।  নিজেদের শক্তি হারিয়ে ফেলে তারা। নিয়ন্ত্রিত হয় পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা, যা কয়েক মাস পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।  তবে পৃথিবীকে সম্পূর্ণ ভাবে প্রদক্ষিণ করতে পারে না এই বস্তুসমূহ। 



2024 PT5 গ্রহাণুটি পৃথিবীর কক্ষপথের সমান্তরাল ভাবেই এগোচ্ছিল। সেই সময়ই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রভাবিত অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। এই ঘটনা কাছাকাছি অবস্থানে থাকা মহাজাগতিক বস্তূসমূহের সঙ্গে পৃথিবীর সম্পর্ক বুঝতে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের। তবে এই প্রথম নয়। এর আগে, ১৯৮১ এবং ২০২২ সালেও এমন ঘটনা ঘটে।