নয়াদিল্লি: পৃথিবীর বাইরের দুনিয়ায় বিচরণই মহাকাশ অভিযানের একমাত্র লক্ষ্য নয়। মহাজাগতিক বিপদ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করাও লক্ষ্য বিজ্ঞানীদের। সেই কাজে নেমে দু'বছর আগে ইতিহাস রচনা করে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. রকেট দেগে, ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দেয় একটি গ্রহাণুকে। এবার সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের ভিডিও আলাদা ভাবে সামনে আনা হল। দু'বছর আগে ওই বিশেষ মুহূর্ত সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল। (NASA DART Mission)
২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মহাকাশ গবেষণার জগতে ওই ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৃষ্ট হয়। সেই প্রথম মহাজাগতিক আক্রমণ প্রতিহত করার উপযুক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্মোচিত হয় সকলের সামনে, যাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সেই সময়। এবার ওই বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও সামনে এল। NASA-র তরফেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। (Planetary Defence Test)
ধাক্কা মেরে গ্রহাণুকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার ওই অভিযানের নাম Double Asteroid Redirection Test (DART) রাখা হয়েছিল। Didymos নামের একটি বড় গ্রহাণুকে প্রদক্ষিণ করছিল Dimorphos নামের ছোট গ্রহাণুটি। NASA-র DART মহাকাশযানটি ঘণ্টায় ১৪০০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে গিয়ে তাকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দেয়। আগামীতে পৃথিবীর বুকে এমন কোনও গ্রহাণু বা অন্য মহাজাগতিক বস্তু আছড়ে পড়ার উপক্রম হলে, একই পদ্ধতি অবলম্বন করা যাবে বলে জানায় NASA.
ওই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, দূরের গ্রহাণুটির সঙ্গে দূরত্ব ক্রমশ কমছে। ছোট বিন্দু থেকে ধীরে ধীরে গ্রহাণুটির এবড়ো খেবড়ো গঠন স্পষ্ট হয় চোখের সামনে। এর পর জোর ধাক্কা এবং স্ক্রিনটি লাল হয়ে যায়। ওই ধাক্কার পর টেলিস্কোপে চোখ রেখে দেখা যায়, Dimorphos-এর গতি বদলে গিয়েছে।
অভিযানের সময় পৃথিবী থেকে ৭০ লক্ষ মাইল দূরে অবস্থান ছিল গ্রহাণুটির। ১০ মাস আগে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এই বিশেষ অভিযানের জন্য DART-কে মহাকাশে পাঠানো হয়। এই সাফল্যের পর নাসা-র তরফে লিখিত বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘মহাকাশ বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা হল। গ্রহাণু আছড়ে পড়ার বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করার যোগ্যতা অর্জন করলাম আমরা’। Dimorphos নামের গ্রহাণুটি আয়তনে প্রায় ৫৩০ ফুট। মিশরের বৃহদাকার পিরামিডের সঙ্গে তার তুলনা চলে।