নয়াদিল্লি: গল্পের বইয়ে তাদের কথা পড়েছি আমরা। সচক্ষে দেখার সুযোগ হয়নি আমাদের কারও। কিন্তু সমস্ত হিসেবনিকেশ উল্টে যাচ্ছে এই মুহূর্তে। পৃথিবীতে ড্রাগনের প্রত্যাবর্তন ঘটছে বলে জোর শোরগোল। তবে শুধুই শোরগোল নয়, শুরু আবির্ভাব ঘটেও গিয়েছে ইতিমধ্যে। পরিস্থিতি এমন যে, নীল ড্রাগনের উৎপাতে একের পর এক সমুদ্রসৈকতই বন্ধ করে দেওয়া হল স্পেনে। (Blue Dragons in Spain)
স্পেনের সমুদ্র সৈকতে নীল রংয়ের ড্রাগন দেখা গিয়েছে বলে খবর। জলের তোড়ে সেগুলি ভেসে আসছে বলে দাবি স্থানীয়দের। খোলসের ভিতর শামুক যেমন দেখতে, এই নীল ড্রাগনের গড়নও তেমন বলে জানা যাচ্ছে। সেগুলিকে Blue Dragon বলে উল্লেখ করছেন অনেকে। নীল ড্রাগন বিষাক্ত এবং বিষধর বলেও জানা গিয়েছে। হুল ফুটিয়ে শরীরে বিষ ঢালে। মারা যাওয়ার পরও বিষ সক্রিয় থাকে। (Blue Dragons Viral Video)
স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বের সমুদ্রসৈকতেই মূলত নীল ড্রাগন দেখা যাচ্ছে বলে খবর। চলতি সপ্তাহেই দু’-দু’টি ড্রাগন চোখে পড়ে। এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সকলে যে দেশের পাঁচটি জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকত আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে, কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না সেখানে। যে সমুদ্রসৈকতে যেতে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে জল নামা, সাঁতার কাটা বন্ধ। কিছু জায়গায় সাঁতারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও, কড়া বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই অবস্থাই বজায় থাকবে।
যে নীল ড্রাগনকে ঘিরে এই মুহূর্তে আতঙ্কের পরিবেশ স্পেনে, সেগুলি কল্পবিজ্ঞানের বইয়ে পড়া দৈত্যাকার কোনও প্রাণী নয়। আকারে হাতের তালুর চেয়েও অনেক ছোট। এখনও পর্যন্ত জলের তোড়ে সমুদ্রসৈকতে যেগুলি ভেসে এসেছে, তার মধ্যে কয়েকটি মাত্র ১.৩ ইঞ্চি দীর্ঘ। কল্পবিজ্ঞানের বইয়ে পড়া ড্রাগনের সঙ্গে চেহারা মিলে যাচ্ছে বলেই সেগুলিকে নীল ড্রাগন বলা হচ্ছে।
তবে আকারে ছোট হলেও, এই নীল ড্রাগন বিষধর। প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগের প্রাপ্ত man o’war-এর মতোই। এতই বিষধর যে, আকারে ৩০০ গুণ বড় প্রাণীর শরীর অসাড় করে দিতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, এই সামুদ্রিক প্রাণী অত্যন্ত বিপজ্জনক। ছোঁয়া লাগলেই ত্বক পুড়ে যায়। নীল ড্রাগন দেখলে যাতে তাকে কেউ ধরতে না যান, হাতে যেন গ্লাভস পরে থাকেন, তা নিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করেছেন গুয়ারদামার দেল সেগুরা শহরের মেয়র হোসে লুই সেজ়। নীল ড্রাগন কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতস্থান পরিষ্কারের কথা জানিয়েছেন তিনি। হাতের কাছে কিছু না পেলে, লবণ জলেই ধুয়ে নিতে হবে ক্ষতস্থান। নীল ড্রাগন হুল ফুটিয়ে বিষ ঢাললে বমি হতে পারে, যন্ত্রণা হতে পারে, প্রদাহজনিত সমস্যা, ব়্যাশ, অ্যালার্জি হতে পারে শরীরে।
নীল ড্রাগনের যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে ঊজ্জ্বল নীল, সাদা ও ধূসরের নকশা রয়েছে তার শরীরে। উঁচু থেকে নীল জলের সঙ্গে সেভাবে পার্থক্য বোঝা যায় না। কিন্তু কাছ থেকে দেখলে ধাঁধা লেগে যায় চোখে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জলের তোড়ে সমুদ্রসৈকতে উঠে আসছে নীল ড্রাগন। তারা স্পেনে কী করে পৌঁছল, তা নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর নেপথ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা রয়েছে।