নয়াদিল্লি: মানব সভ্যতার ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনার কথা এলে, সবার আগে উল্লেখ আসবে চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষের অবতরণ। পৃথিবীর বাইরে রহস্যে মোড়া কোন জগতের প্রতি অমোঘ এই আকর্ষণ এড়াতে পারেনি কোনও দেশই। তবে মহাকাশ অভিযানে দলে দলে নাম লেখানোর হিড়িক দেখা গেলেও, এখনও পর্যন্ত তাতে সাফল্য পেয়েছে হাতেগোনা কিছু দেশই। বুধবার সেই তালিকায় নাম তুলে ফেলল ভারতও। বুধবার সন্ধেয় চাঁদের বুকে পা রেখেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান। এই অভিযানের সাফল্যেইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ভারতের নাম। (Chandrayaan 3 Moon Landing)


বুধের এই অভিযান সফল হওয়াল পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন (অধুনা রাশিয়া), আমেরিকা এবং চিনের পর ভারত চতুর্থ দেশ হিসেবে জায়গা পেল ইতিহাসে, যারা চাঁদের মাটি ছুঁতে সফল হয়েছে। একাধিক কারণে ভারতের জন্য় এই অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামনের বছর লোকসভা নির্বাচনও রয়েছে। চন্দ্রাভিযানে অভিযানে জয়ধ্বজা ওড়ানোর সুফল নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি ঘরে তুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। (Chandrayaan 3 Landing)


রাজনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে চন্দ্রযান-২৩ অভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ব্যবসায়িক স্বার্থও। আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলিতে মহাকাশ অভিযানের সাফল্যে বেসরকারি বিনিয়োগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে সফল ভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামানো সম্ভব হওয়ায়, আগামী দিনে ভারতের মহাকাশ অভিযানে বেসরকারি বিনিয়োগ পেতে আরও সুবিধা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে স্যাটেলাইট নির্ভর ব্যবসা এবং মহাকাশযান তৈরির সংস্থাগুলি আগামী দিনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। 


আরও পড়ুন: Chandrayaan 3 Landing: বহির্বিশ্বকে ছুঁয়ে দেখার পালা, করোনাকালেও নিবিষ্ট ছিলেন লক্ষ্যে, তৃতীয় চন্দ্রাভিযানের নেপথ্যনায়ক যাঁরা


দিল্লি সূত্রে খবর, চন্দ্রযান-৩ অভিযান সফল হওয়ার পর ভারতের মহাকাশ অভিযান প্রকল্পে বেসরকারি সংস্থাগুলির যোগদান পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে আগামী দশকেই। এর ইঙ্গিত যদিও আগেই দিয়ে রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের ঘোষণা হতেই, মোদি বলেছিলেন, "ভারতীয় মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে নয়া মহাকাব্য রচনা হতে চলেছে।" বেছে বেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুকে বেছে নিয়েছে ISRO. সেখানে জলের অস্তিত্ব রয়েছে বলে অনুমান বিজ্ঞানীদের।


 ভারতই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পদার্পণকারী প্রথম দেশ। আগামী দিনে চন্দ্রঅভিযান থেকে চাঁদে উপনিবেশ গড়ে তোলার জন্য যে অক্সিজেন, জ্বালানি এবং জলের প্রয়োজন পড়বে, তার জন্য চন্দ্রযান-৩ অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অভিযানের সাফল্য আগামী দিনে আর্টেমিস চুক্তি স্বাক্ষরেও এগিয়ে দেবে ভারতকে, যার আওতায় প্রথমে চাঁদ এবং তার পরে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তাই ISRO চন্দ্রযান-৩ অভিয়ানে সফল হোক, তা চাইছিল বেসরকারি সংস্থাগুলিও। সেক্ষেত্রে মহাকাশ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির দুনিয়ায় তাদেরও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে।