Chandrayaan 3: গত ১৪ জুলাই চাঁদে পাড়ি দিয়েছে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3)। এর আগে ২০১৯ সালে চাঁদে পাঠানো হয়েছিল চন্দ্রযান ২ (Chandrayaan 2)। তবে সেই মিশন (Lunar Mission) সফল হয়নি। এর প্রায় চারবছর পরে ২০২৩ সাল অর্থাৎ চলতি বছর তৃতীয়বার চাঁদে পাড়ি দিয়েছে ভারতের মহাকাশযান। এবার লক্ষ্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু, যে অংশে এখনও পৌঁছতে পারেনি কোনও দেশের মহাকাশযান। সব ঠিক থাকলে ইতিহাস তৈরি করবে ভারত। সাক্ষী থাকবে গোটা দেশ। এখনও পর্যন্ত অভিযানে সফল হয়েছে চন্দ্রযান ৩। আপাতত লক্ষ্য সফট-ল্যান্ডিং। একদম পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ফেলতে চায় চন্দ্রযান ৩।


কী এই সফট-ল্যান্ডিং? কীভাবেই বা সম্ভব হবে গোটা বিষয়টি। চলুন জেনে নেওয়া যাক খুঁটিনাটি তথ্য। 



  • চন্দ্রযান ৩ মহাকাশযানে রয়েছে তিনটি মডিউল। প্রোপালশন, ল্যান্ডার এবং রোভার। এই ল্যান্ডারের নাম বিক্রম। চাঁদের মাটিতে সফলভাবে এই ল্যান্ডারের অবতরণই হল আসল চ্যালেঞ্জ। এই ল্যান্ডারই আসলে চাঁদের বুকে সফট-ল্যান্ডিং করবে, যাকে সাধারণ ভাষায় বোঝানোর জন্য বলা যেতে পারে যে হাওয়ায় যেমন পালক ভেসে থেকে একদম আস্তে করে মাটি ছুঁয়ে ফেলে, এক্ষেত্রেও বিষয়টা অনেকটা সেইরকম। 

  • প্রোপালশন মডিউলের কাজ হল ল্যান্ডার এবং রোভারকে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়া। ISRO জানিয়েছে, চাঁদের 'স্ফিয়ার অফ ইনফ্লুয়েন্স' অর্থাৎ 'মায়াবৃত্তে' ঢুকে পড়েছে চন্দ্রযান-৩, চাঁদ থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৬২ হাজার ৬৩০ কিলোমিটার। এই মায়াবৃত্তে ঢুকে পড়ার অর্থ, চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আওতায় ঢুকে পড়া। 

  • চন্দ্রযান ৩- এর অরবিটার চাঁদের কক্ষপথে 100 km x 100 km এলাকায় ল্যান্ডিং করে রোভার এবং ল্যান্ডারকে পৌঁছে দেবে। তারপর মহাকাশযানের প্রোপালশন মডিউল থেকে রোভার এবং ল্যান্ডার আলাদা হয়ে যাবে এবং অবতরণ করবে চন্দ্রপৃষ্ঠে। সফলভাবে অবতরণের পর ল্যান্ডার একজায়গায় স্থিত হবে এবং চাঁদের বুকে ঘুরে ঘুরে অভিযান চালাবে রোভার। 

  • সফট-ল্যান্ডিং বলতে এখানে ল্যান্ডারের সফল অবতরণকেই বোঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে ল্যান্ডার এবং রোভার কারও নূন্যতম ক্ষতি হওয়াও চলবে না। তাহলেই তাকে বলা হবে। অন্যথায় যদি ল্যান্ডার বা রোভারে সামান্য ক্ষতিও লক্ষ্য করা যায় কিংবা অবতরণে কোনও ত্রুটি দেখা যায় (প্রযুক্তি গত সমস্যা, সংঘর্ষ ইত্যাদি) তাকে বলা হবে হার্ড-ল্যান্ডিং। এমনটাই জানিয়েছে ইসরো।

  • চন্দ্রযান ২- এর ক্ষেত্রে সফলভাবে অবতরণ হয়নি। আর তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার আরও সতর্ক ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের সফল অবতরণের ব্যাপারে একটুও ঝুঁকি নিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। ল্যান্ডারের অবতরণের আগে ভালভাবে খতিয়ে দেখা হবে সেই অংশ যেখানে ল্যান্ডার নামবে। এই কাজ পৃথিবীতে বসে করবেন বিজ্ঞানীরা। 

  • অবতরণের সময় সামান্য ক্ষতি হওয়া মানে শুধু ল্যান্ডার বিক্রম নয় তার মধ্যে থাকা রোভার প্রজ্ঞানেরও ক্ষতি হবে। আর এমন ঘটয়া ঘটলে সাফল্য আসবে না চন্দ্রযান ৩- এর অভিযানে। তাই এবার অত্যন্ত সতর্ক রয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কারণ সাফল্য এলে ভারতই হবে এশিয়ার প্রথম দেশ যারা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অভিযান চালাবে, নমুনা সংগ্রহ করবে এবং তা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানানো হবে যে কী রয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই অংশে।

  • চন্দ্রযান ২- এর অবতরণ ক্ষেত্রের তুলনায় এবারের অভিযানে অবতরণের জায়গা চারগুণ বাড়ানো হয়েছে। সমস্ত ধরনের ত্রুটি এবং সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্ভাব্য কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং তার ভিত্তিতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেই ব্যাপারেও পরিকল্পনা তৈরি রয়েছে।


আরও পড়ুন- পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির হাতে-পায়ে সাড় ফিরিয়ে দিল AI, ফের চমক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার