নয়াদিল্লি: মহাকাশ অভিযান ঘিরে পর পর বিপত্তি চিনে। কয়েক দিন আগেই মাঝ আকাশে রকেটের অংশ বিশেষ খুলে যায়, তা আছড়ে পড়ে মাটিতে। এবার ভুল করে মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ হয়ে গেল সেদেশে। মহাকাশে তীব্র বিস্ফোরণের পর ধ্বংসাবশেষ আবার আছড়েও পড়ল মাটিতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। যে বেসরকারি সংস্থা রকেটের উৎক্ষেপণ করছিল, তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। (Tianlong-3 Accidental Launch)


চিনের রাজধানী বেজিংয়ের বেসরকারি সংস্থা Space Pioneer, Tianlong-3 নামের রকেটটি পরীক্ষা করে দেখছিল। হেনান প্রদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত গংগি শহরে রকেটটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছিল। রকেটটি উৎক্ষেপণের কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। বরং সেটিতে দাঁড় করিয়ে রেখে প্রযুক্তিগত দিকগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছিল। সেই সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। (China Accidental Rocket Launch)


জানা গিয়েছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎই রকেটের অ্যাঙ্করিং মেকানিজম, অর্থাৎ যে প্রক্রিয়ায় রকেটটিকে বেঁধে রাখা হয়, সেটি বিকল হয়ে যায়। পরিকাঠামোগত গোলযোগের জেরে রকেটটি টেস্টিং প্ল্যাটফর্ম থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং ইঞ্জিন চালু হয়ে গিয়ে ঊর্ধ্বমুখে রওনা দেয়। রকেটটির নাম রাখা হয়েছিল Tianlong-3, বাংলায় তর্জমা করলে অর্থ হয় 'স্বর্গী ড্রাগন'। ভুলবশত উৎক্ষেপণ হয়ে গেলে আক্ষরিক অর্থেই নিঃশ্বাস বেরনো ড্রাগনের রূপ ধারণ করে রকেটটি। মাত্র ৫০ সেকেন্ডই আকাশে ছিল সেটি। তার পর বিস্ফোরণ ঘটে এবং ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়ে মাটিতে।



আরও পড়ুন: Chandrayaan-3 Findings: চাঁদের বুকে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, সাড়া ফেলল ভারতের চন্দ্রযান-৩


ড্রোন ফুটেজে ওই দৃশ্য ধরা পড়েছে। বহু দূর থেকেই আগুন এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী চোখে পড়ে। ঘন বসতি এলাকায় রকেটটি আছডডে পড়লে কী মারাত্মক হতে পারত পরিস্থিতি, ভেবেই আঁতকে উঠছেন সকলে। এই ঘটনায় যদিও কোনও হতাহতের খবর নেই। ওই বেসরকারি সংস্থা জানিয়েছে, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে আগেই এলাকা খালি করে দেওয়া হয়েছিল। তাতেও সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। 


Space Pioneer সংস্থার তরফে আগেও রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়। তাদের Tianlong-2 রকেটটি ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছয়। Tianlong-3 রকেটটিকে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। পৃথিবীর কক্ষপথে ১৭ টন ওজন হয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল সেটির। ওই সংস্থা জানিয়েছে, ভুলবশত উৎক্ষেপণ হয়ে যাওয়ার পর রকেটের মধ্যেকার কম্পিউটার প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় শাটডাউনের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়, তাতেই পরীক্ষাস্থল থেকে মাত্র ১.৫ কিলোমিটার দক্ষিণে-পশ্চিমে আছড়ে পড়ে রকেটটির ধ্বংসাবশেষ।


মহাকাশ গবেষণাক্ষেত্রেরও বাণিজ্যিকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে।  আমেরিকার পাশাপাশি, চিনের বহু বেসরকারি সংস্থা এই কাজে হাত দিয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে বলে অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠছে।