নয়াদিল্লি: অতি উজ্জ্বল ধূমকেতুকে ঘিরে উৎসাহ তুঙ্গে। কিন্তু ছুটে বেড়ানোর সময় হঠাৎই বিপত্তি ঘটল মহাকাশে। সূর্যের রোষানলে লেজই কাটা গেল ধূমকেতু Lemmon-এর। সৌরঝড়ের ঝাপটায় লেজ কাটা গিয়েছে ধূমকেতুটির। সেই ছবি সামনে আসতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে মহাকাশ প্রেমীদের মধ্যে। তবে ধূমকেতুর লেজবিহীন অবস্থা সাময়িক বলেই জানা যাচ্ছে। (Comet Lemmon)
২১ অক্টোবর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে ছিল ধূমকেতু Lemmon. তার আগে জ্যোতির্চিত্রগ্রাহক পেত্র হোরেলেক চেক রিপাবলিক থেকে ধূমকেতু Lemmon-এর ছবি তুলেছেন, তাতে সাড়া পড়ে গিয়েছে। ছবিতে লাল আভাযুক্ত গোলাপি মেরুজ্যোতিও চোখে পড়ছে। সৌরশিখা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঝাপটা মারার দরুণই ওই মেরুজ্যোতির সৃষ্টি হয়। (Science News)
তবে ধূমকেতু Lemmon-এর লেজে সৌরশিখা ঝাপটা মারেনি। বরং সৌরঝড়ের দাপটই ফালা ফালা করে দেয় তার লেজকে। গ্যাস ও ধুলোর মিশ্রণে তৈরি লেজটি খান খান হয়ে যায় কার্যত। একটা সময় ধূমকেতুর শরীর থেকে আলাদাই হয়ে যায় লেজের অংশ। ধূমকেতুর লেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা একেবারেই নতুন কিছু নয়। কিন্তু শরীর থেকে লেজ আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘটনা একবারেই বিরল।
এর আগে, গত ৪ অক্টোবরও সৌরঝড়ে সাময়িক ধড় থেকে লেজ আলাদা হয়ে যায় ধূমকেতু Lemmon-এর। যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার লেজ গজিয়ে যায়।
চলতি বছরেই ধূমকেতু Lemmon-কে আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। গত ৩ জানুয়ারি সেটির দেখা মেলে অ্যারিজোনার স্কাই সেন্টার অবজার্ভেটরি থেকে। প্রতি ১৩৫০ বছর অন্তর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে ধূমকেতু Lemmon. পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকাকালীন তার দূরত্ব ছিল ৯ কোটি কিলোমিটার।
গত কয়েক সপ্তাহে ধূমকেতু Lemmon-এর ঔজ্জ্বল্য ক্রমশ বেড়েছে। সূর্যের থেকে দূরত্ব যত কমেছে, ততই গ্য়াস, বরফ ও ধুলো মোড়া শরীর প্রসারিত হয়েছে তার। খালিচোখেও রাতের আকাশে দেখা মিলছে সেটির। উত্তর গোলার্ধের মানুষের কাথে দৃশ্যমান সেটি।
শুধু ধূমকেতু Lemmon-ই নয়, এই মুহূর্তে রাতের আকাশে বিরাজ করছে ধূমকেতু SWAN-ও। ২০ অক্টোবর সেটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে ছিল। Lemmon ও তার মধ্যে দূরত্বও আহামরি কিছু নয়। তবে SWAN-কে খালিচোখে দেখা যাচ্ছে না। রাতের আকাশে একসঙ্গে দু’-দু’টি ধূমকেতুর এহেন অবস্থান সত্যিই বিরল।