কলকাতা: সদ্যোজাত বা একেবারে অল্পবয়সি শিশুরা চোখ কচলালেই মা-বাবা ভাবতে থাকেন, নিশ্চয়ই ঘুম পেয়েছে। কিন্তু চোখ কচলানোর (Eye Rubbing And Sleep) সঙ্গে ঘুম পাওয়ার সম্পর্ক কী? কেন ঘুম পেলেই শিশুদের সাধারণভাবে চোখ কচলাতে দেখা যায়? শুধু শিশু নয়, অনেক সময় বড়দের ক্ষেত্রেও একই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। কিন্তু প্রশ্নটা এখানেই। ঘুমের সঙ্গে চোখ কচলানোর সম্পর্ক কী?


বিশেষজ্ঞদের মতে...
শিশুরোগ-বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকদের একাংশ মনে করেন, ক্লান্তির সঙ্গে চোখের পেশির সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। তাঁদের মতে, মানুষ যখন ক্লান্ত হয়ে পড়লেও চোখ কচলাতে দেখা যেতে পারে। আসলে ক্লান্তিবোধ চোখের পেশির মধ্যেও সঞ্চারিত হয়, ফলে একটানা তাকিয়ে থাকতে অস্বস্তি হতে পারে। সেখান থেকে চোখ কচলানো, এরকম একটি ব্যাখ্যায় বিশ্বাস করেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে। আরও একটু ভেঙে বললে হয়তো বিষয়টি ভাল বোঝা সম্ভব। ধরুন, কেউ দিনভর ডেস্কে বসে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে একটানা কাজ করেছেন। এর পর, ওই ব্যক্তির কাঁধে 'ম্যাসাজ' করে দিলে যে আরাম হয়, চোখ কচলালেও চোখের ক্লান্ত পেশিগুলির অনেকটা সেরকম আরাম অনুভূত হয়ে থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখের পেশি ক্লান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। কারণ, তারা যে সময়টা জেগে থাকে, সে সময়টার অনেকটাই কোনও এক বা একাধিক বস্তুর দিকে একটানা তাকিয়ে থাকতে চায়। ফলে সহজেই চোখের পেশি ক্লান্ত হয়ে পারে। তবে এর আরও একটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন শিশুরোগ-বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
সদ্যোজাত বা একেবারে অল্পবয়সি খুদেরা সাধারণ ভাবে বড়দের তুলনায় খুব কম চোখের পলক ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে, টানা কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ 'ড্রাই' হতে চায়। সেখান থেকেও এই আচরণ করতে পারে খুদেরা। এর সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার বেশ খানিকটা মিল রয়েছে বলেও মত ডাক্তারদের কারও কার। সাধারণ অবস্থায় আমরা যে ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিই তার নিরিখে কোনও জিনিস নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকলে বা ক্লান্তি ঘিরে ধরলে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরন অনেকটা বদলে যেতে পারে। এরকম কিছুক্ষণ চলতে থাকলে একটু পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। চোখের ক্ষেত্রেও বিষয়টা তাই। অনেকক্ষণ ধরে একটানা, পলক না ফেলে কোনও একটি দিকে তাকিয়ে থাকলে সেটিও ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। চোখ কচলানো এক্ষেত্রে সেই দীর্ঘশ্বাস ফেলার মতো কাজ করে।


সতর্কবার্তা...
তবে শিশুর ঘন ঘন চোখ কচলানো মোটেও স্বাস্থ্যকর বিষয় নয়, বলছেন ডাক্তাররা। বিশেষত, এই ধরনের আচরণ খুব বেশি হতে থাকলে তা থেকে পরবর্তীকালে দৃষ্টির সমস্যাও হতে পারে। তাই কোনও শিশু খুব বেশি এরকম কিছু করলে একবার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নেওয়া ভাল।


 


আরও পড়ুন:কেমন ছিল বিশ্বের প্রথম ভিডিয়ো কল ? কে কাকে করেন? কী নিয়ে গপ্পো হয় ?