কলকাতা: চলতি বছরে ফিজিওলজি তথা মেডিসিনে (Nobel In Medicine 2023) নোবেল পেলেন কাতালিন কারিকো (Katalin Kariko) এবং ড্রিউ ওয়েইজম্যান (Drew Weissman)। কোভিড-১৯ (Covid-19 mRNA Vaccine) অতিমারি মোকাবিলায় কার্যকরী mRNA টিকা তৈরির ক্ষেত্রে 'নিউক্লিওসাইড বেস মডিফিকেশন' -র সন্ধান দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই আবিষ্কারের জন্যই এবার ফিজিওলজি তথা মেডিসিনের নোবেলের শিরোপা পেলেন কারিকো ও ওয়েইজম্যান।
নোবেলজয়ীর সাফল্য নিয়ে দু'কথা...
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে mRNA-এর ঠিক কী রকম আদানপ্রদান হয়ে থাকে, সেটিই দেখিয়েছিল কারিকো এবং ওয়েইজম্যানের গবেষণা। আর এই গবেষণার ফলাফল কোভিড-১৯-এর mRNA প্রতিষেধক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। অতিমারির কঠিন সময় দুই বিজ্ঞানীর এমন 'কাজ'-কে স্বীকৃতি জানাতেই চলতি বছরের ফিজিওলজি তথা মেডিসিনের নোবেল তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে mRNA টিকা তৈরির ক্ষেত্রে তাঁদের আবিষ্কার এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, সেটি ঠিক কী?
mRNA টিকা কী?
যে কোনও ধরনের টিকা বা প্রতিষেধকের মূল কাজ হল 'বিদেশি' বা 'বহিঃশত্রুর' আক্রমণের মোকাবিলা করা। কখনও ব্যাকটিরিয়া, কখনও ভাইরাস, কখনও প্যাথোজেনের রূপে শরীরে অনুপ্রবেশ করে এই শত্রুরা। টিকার মূল কাজ এই শত্রুদের মোকাবিলা, তবে সে জন্য সাধারণত এক ধরনের নির্দিষ্ট কৌশল অনুসরণ করা হয়। যে ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে প্রতিষেধক নেওয়া হচ্ছে, টিকার মাধ্যমে সাধারণ ভাবে সেই ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাসেরই 'নির্বিষ' একটি রূপ দেহে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থাকেই সচেতন হয়ে ওঠে। এই ধরনের টিকার ক্ষেত্রে সাধারণত 'শত্রু' ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাসটির 'দুর্বল' বা 'মৃত'সংস্করণ শরীরে ঢোকানো হয়ে থাকে। কিন্তু mRNA টিকার কার্যপদ্ধতি আলাদা। এই ধরনের প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে আসল ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়ার দুর্বল বা মৃত সংস্করণ ব্য়বহার না করে এক ধরনের বিশেষ মলিকিউল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মলিকিউলের নাম মেসেঞ্জার RNA বা mRNA। এটি এমন এক ধরনের RNA যা নির্দিষ্ট প্রোটিন তৈরির ক্ষেত্রে আবশ্যক ভূমিকা নেয়। তবে রোগ প্রতিরোধী প্রোটিন তৈরি হয়ে গেলেই এই mRNA ভেঙে যায়। এই ধরনের টিকা থেকে আসা mRNA কোষের নিউক্লিয়াসে ঢোকে না, DNA-তেও রদবদল ঘটায় না।
এই mRNA নিয়েই নিজেদের দুরন্ত গবেষণাফল প্রকাশ করেছিলেন কারিকো-ওয়েইজম্যান। সেটা ২০০৫ সাল। কোভিড-১৯ অতিমারি শুরু হতে তখনও ১৫ বছর। এর পরও ২০০৮ এবং ২০১০ সালে ইমিউনোলজিস্ট ওয়েইজম্যানকে সঙ্গে করে অনন্য গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন হাঙ্গেরিয়ান বায়োকেমিস্ট কারিকো। ২০১০ সাল থেকে mRNA টিকা তৈরির ব্যাপারে বহু বহুজাতিক সংস্থা উৎসাহ দেখাতে শুরু করে। 'জিকা ভাইরাস' and 'মার্স-কোভ'-এর mRNA টিকা তৈরি নিয়েও কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে সার্স-কোভ-২ বা কোভিড-১৯ অতিমারির দাপটে ছবিটা বদলে যায়।
বাকিটা জানা।
আরও পড়ুন:ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে বলে টমেটো, পেঁয়াজ ছেড়ে দিয়েছেন? ভুল ধারণা ভেঙে ফেলুন