নয়াদিল্লি: চেনা পৃথিবী দিনে দিনে অচেনা হয়ে উঠছে বলে রব উঠছে চারিদিকে। প্রাণধারমের নিরাপদ আশ্রয় ক্রমশ বিষিয়ে উঠছে বলে উঠছে গেল গেল রব। পরিবেশ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তনকেই এর জন্য দায়ী করছেন সকলে। তার মধ্যেই একবার ফের খবরের শিরোনামে আন্টার্কটিকা। সেখানে বরফ ফুঁড়ে এদিক ওদিক তরতর করে ফুল, পানা এবং শৈবাল গজিয়ে উঠছে বলে জানা গেল। (Flowers in Antarctica)
আন্টার্কটিকায় মূলত Hair Grass এবং Antarctic Pearnwort, এই দুই প্রজাতির গাছের ফুল চোখে পড়ে। এর মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত Hair Grass-এর বৃদ্ধি গত ৫০ বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে Antarctic Pearnwort-এর বৃদ্ধিও পাঁচ গুণ বেশি হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেদার ফুলের ছবি পোস্ট করে যাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু সব ধরনের ফুল আন্টার্কটিকায় ফোটে না। শুধুমাত্র Hair Grass এবং Antarctic Pearnwort-ই সেখানে জন্মায়। দক্ষিণের Signy দ্বীপেই মূলত চোখে পড়ে সেগুলি। (Science News)
আন্টার্কটিকায় ফুল ফোটা এবং গাছ গজিয়ে ওঠার খবরে সাড়া পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। আন্টার্কটিকায় জমির দাম কত হতে পারে, তা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা। কিন্তু এতে উৎফুল্ল হওয়ার কোনও কারণ নেই, বরং আসন্ন বিপদ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার সময় এসেছে বলে মত বিজ্ঞানীদের।তাঁদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে, তাতেই সময়ের সঙ্গে আন্টার্কটিকায় গাছের সংখ্যা বাড়ছে। অলাভজনক পরিবেশ সংস্থা ডিসকভারিং আন্টার্কটিকা জানিয়েছে, মনুষ্যঘটিত কারণেই আন্টার্কটিকার গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে বরফও পিছু হটতে শুরু করেছে সেখানে। (Climate Change)
আরও পড়ুন: Science News: উত্তেজনার বশে কৃষ্ণগহ্বরকে গিলে ফেলল নক্ষত্র, তার পরই মর্মান্তিক পরিণতি
এমনিতে আন্টার্কটিকার বরফের চাদর ক্রমশ পাতলা হয়ে উঠছে। এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। আগে গোটা সাগরের উপর বরফের পুরু চাদর থাকলেও, ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তার বিস্তৃতি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA, ন্যাশনাল স্টোন অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে আন্টার্কটিকার ১ কোটি ৬৯ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়েই বরফ রয়েছে।
২০২৩ সালের গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রার পারদ যেভাবে লাগাতার চড়েছে, তারই ফলশ্রুতি হিসেবে আন্টার্কটিকায় বরফের এই বিস্তৃতি কমে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এবছর মার্চ মাসে পর পর তিন দিন দক্ষিণ মেরুর কাছে তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন অস্বাভাবিকতা আগে কখনও চোখে পড়েনি।
এর আগে, ২০২২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন আন্টার্কটিকায় এযাবৎকালীন সবচেয়ে তীব্র তাপপ্রবাহের কথাও জানিয়েছিল। সেই সময় বায়ুমণ্ডল নিয়ে আন্টার্কটিকায় গবেষণা চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড ব্ল্যাঞ্চার্ড রিগলওয়র্থের সহযোগীরা। তিনি জানিয়েছেন, ওই সময় খালি গায়ে, শুধুমাত্র শর্টস পরেই আন্টার্কটিকায় কাজ করছিলেন তাঁর সহযোগীরা।