নয়াদিল্লি: মহাজাগতিক কর্মকাণ্ডের আঁচ এসে পড়েছিল বসতি এলাকায়। তার আঁচে গোটা শহরের জানলা-দরজা উড়ে গিয়েছিল। একদশক আগে আকাশ দিয়ে গ্রহাণু বিস্ফোরণের যাওয়ার সময় এমনই অবস্থা হয়েছিল রাশিয়ার শুলিয়াবিনস্ক শহরের। একবার ফের পৃথিবীর আকাশে দৈত্যাকার গ্রহাণুর আবির্ভাব ঘটতে চলেছে (Science News)। ২৫ মার্চ, শনিবার দুপুর ৩টে বেজে ৫২ মিনিট নাগাদ পৃথিবীর আকাশে দেখা যেতে পারে 2023 DZ2 গ্রহাণুর (Asteroid 2023 DZ2)।


অভূতপূর্ব ঘটনা মহাকাশ গবেষণার কাজে বিজ্ঞানীদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে


পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যে দূরত্ব ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। শনিবার তার অর্ধেক দূরত্ব দিয়ে উড়ে যাবে 2023 DZ2 গ্রহাণুটি। অর্থাৎ পৃথিবীর একদম গা ঘেঁষে সেটি বেরিয়ে যাবে। তবে তাতে বিপদের কিছু নেই বলে দাবি বিজ্ঞানীর। বরং এই অভূতপূর্ব ঘটনা মহাকাশ গবেষণার কাজে বিজ্ঞানীদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে দাবি করছেন তাঁরা। 


শনিবার ঘণ্টায় প্রায় ২৮ হাজার ৪৪ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীর গা ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে 2023 DZ2 গ্রহাণুটি। তারা দেখার শখ রয়েছে যাঁদের, উত্তর গোলার্ধ থেকে ছয় ইঞ্জির টেলিস্কোপ দিয়ে সেটি শুক্রবারই দেখতে পারেন তাঁরা। এ ছাড়াও, ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ প্রজেক্টের ওয়েবসাইটে সেটি লাইভ দেখা যাবে। আপাতদৃষ্টিতে সেটিকে শ্লথ গতিতে এগিয়ে চলা নক্ষত্র বলে ঠাহর হবে। 


আরও পড়ুন: WhatsApp Desktop App: হোয়াটসঅ্যাপের ডেস্কটপ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে নতুন সুবিধা, গ্রুপ কলে যুক্ত করা যাবে বেশি ইউজার


উত্তর-পশ্চিম  আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চলের লা পালমা অবজারভেটোরি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম বার 2023 DZ2 গ্রহাণুটি আবিষ্কৃত হয়। সেটির ব্যাস প্রায় ৪৪ থেকে ৯৯ মিটারের মধ্যে। এই গ্রহাণুটি ৩.১৭ বছরে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর কক্ষপথ পেরিয়েই এগিয়ে চলে সেটি। কোথা থেকে এর উৎপত্তি যদিও জানা যায়নি। তবে এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্রহাণুর অধিকাংশই মঙ্গল এবং বৃহস্পতির গ্রহাণু বলয়ের বাসিন্দা। বৃহস্পতির সংস্পর্শে এসে সেগুলি মূল কক্ষপথ থেকে ছিটকে যায়। 


আতঙ্কের কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা


2023 DZ2 গ্রহাণুকে নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এই মুহূর্তে তার উপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাচ্ছে। অন্তত আগামী এক শতক এই গ্রহাণুকে ঘিরে বিপদের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে মত বিজ্ঞানীদের। তবে কোনও ভাবে যদি এই গ্রহাণু আছড়ে পড়ে পৃথিবীতে, তাতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হতে পারে। কারণ এর আগে, ২০১৩ সালে রাশিয়ার আকাশে ১৮ মিটার ব্যাসের একটি গ্রহাণু ফেটে যায়। তার আঁচে ৭ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত হন ১৪০০ মানুষ। জানলা-দরজা উড়ে যায়। 2023 DZ2 গ্রহাণুটি তার চেয়ে কমপক্ষে তিন গুণ বড় আয়তনে।