নয়াদিল্লি: হারিয়ে যাওয়া কোনও কিছু কি আবার ফিরে আসে? তাও আবার সাড়ে ১৫ কোটি বছর আগে হারিয়ে গিয়েছিল এমন কিছু? ছোটখাটো কোনও জিনিস নয়, সাড়ে ১৫ কোটি বছর আগে 'নিখোঁজ' আস্ত একটি মহাদেশের (Scientists found lost continent) হদিশ মিলেছে বলে দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। মহাদেশের নাম? 'আরগোল্যান্ড' ( Argoland)। বিজ্ঞানীদলের দাবি, বহু কোটি বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল এই ভূখণ্ড। কিন্তু কোথায় যায় সে? এত দিন জানা ছিল না। এবার তারই হদিশ মিলেছে, দাবি নেদারল্যান্ডসের ইউট্রেক্টট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট 'লাইভ সায়েন্স'-কে এই নিয়ে বিশদ জানিয়েছেন তাঁরা।


কী দাবি গবেষকদের?
ইউট্রেক্টট বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ডিপার্টমেন্ট অফ আর্থ সায়েন্স' -র গবেষক এল্ডার অ্যাডভোকাট বলেন, 'আমরা জানতাম অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাংশে কোথাও ওই ভূখণ্ডের হদিশ মিলতে পারে। তাই এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সন্ধান করি।' গবেষকদলের মতে, বহু কোটি বছর আগে যে ভাবে অস্ট্রেলিয়া থেকে 'আরগোল্যান্ড' বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, তারা সেই ঘটনার পুননির্মাণ করে বুঝতে চেষ্টা করেন এখন ওই ভূখণ্ড কোথায় থাকতে পারে। অনুসন্ধানের সূত্র ধরে ইন্দোনেশিয়া এবং মায়ানমারে কিছু প্রাচীন ভূখণ্ডের বিচ্ছিন্ন অংশের সন্ধান পাওয়া যায়, জানাচ্ছেন গবেষকরা। তবে কি এটিই 'আরগোল্যান্ড'? এল্ডার অ্যাডভোকাট বললেন, 'ওই বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড থেকে গবেষকরা যখন আরগোল্যান্ডের কাল্পনিক চিত্র তৈরির চেষ্টা করলেন তখন কিন্তু কিছুই মেলেনি।' তা হলে সে গেল কোথায়?
এবার উল্টো দিক থেকে ভাবতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা অংশ থেকে 'আরগোল্যান্ড' সম্পর্কে নানা তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে এটা বোঝার চেষ্টা করেন, কী ভাবে সে অস্ট্রেলিয়া থেকে আলাদা হওয়ার পর উত্তর দিকে এসেছিল। সে সূত্রেই প্রাচীন ভূখণ্ডের বিচ্ছিন্ন অংশ খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করা শুরু করেন তাঁরা। দেখা যায়, প্রায় ২০ কোটি বছর আগেকার, ছোট কোনও মহাসাগরেরও চিহ্ন রয়েছে ওই ভূখণ্ডে। তাঁরা জানতে পারেন, টেকটনিক শক্তির ধাক্কায় হারিয়ে যাওয়া মহাদেশটি ভেঙে চুরে যায়। প্রথমে সেটি বাকি মহাদেশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তার পর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে ভেসে যায়। 


অতঃ কিম...
এই হাইপোথিসিসের উপর ভিত্তি করে ইউট্রেক্টট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ধারণা, 'আরগোল্যান্ড' কখনওই হারিয়ে যায়নি। বরং ছিন্নবিচ্ছিন্ন অবস্থায় অনেকটা অংশ জুড়ে সে আজও রয়েছে। নির্দিষ্ট করে বললে ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাংশের যে দ্বীপপুঞ্জ রয়েছে, তার নিচে এই ছিন্নবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের অবস্থান। ইউট্রেক্টট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ ডুউই ভন হিনসবার্গেন ও এল্ডার অ্যাডভোকাট মিলে এই ভূখণ্ডের নাম রেখেছেন 'আরগোপেলাগো'। তাঁদের আশা, এই গবেষণা ওই এলাকার আবহাওয়া, জলবায়ু বুঝতেও সাহায্য করবে।


আরও পড়ুন:বিজ্ঞানশিক্ষায় পুরাণের উড়ন্ত রথের উল্লেখ, মোদির জন্য সফল চন্দ্রযান-৩! ফের কাঠগড়ায় NCERT